মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি ভবিষ্যতে আবারও প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার কথা ভাবছেন।
বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন, “সম্ভবত একদিন আমি প্রেসিডেন্ট হবো।” তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যোগ করেন, “একদিন না একদিন যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্যই একজন নারী প্রেসিডেন্ট হবেন।”
এটি এখন পর্যন্ত হ্যারিসের সবচেয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত যে তিনি ২০২৮ সালে আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজয়ের পরও তিনি নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী।
রবিবার প্রচারিত হবে এমন এই সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন, “আমি এখনো শেষ হয়ে যাইনি। সারা জীবন জনসেবায় কাটিয়েছি—এটা আমার রক্তে।”
হ্যারিস বলেন, তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, তবে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন। জরিপে পিছিয়ে থাকার প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করেন, “যদি জরিপের কথা শুনতাম, তাহলে আমার প্রথম বা দ্বিতীয় কোনো নির্বাচনে অংশ নিতাম না, আর নিশ্চয়ই আজ এখানে বসে থাকতাম না।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তিনি “স্বৈরাচারী” আখ্যা দিয়ে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প সম্পর্কে তার সতর্কবাণী এখন বাস্তব প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প বিচার বিভাগের অপব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করছেন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে ফেলেছেন।
হ্যারিস বলেন, “তিনি যে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবেন বলেছিলেন, সেটাই এখন করছেন। রাজনৈতিক ব্যঙ্গকারীদেরও লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে।”
এ ছাড়া তিনি আমেরিকার বড় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সমালোচনা করেন, যারা “ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে” ট্রাম্পের সামনে নতজানু হচ্ছে বলে দাবি করেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এক মুখপাত্র হ্যারিসের বক্তব্যের জবাবে বলেন, “কামালা হ্যারিস জনগণের রায় পেয়েছেন। তিনি পরাজিত হয়েছেন, এখন আবার বিদেশি গণমাধ্যমে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।”
সম্প্রতি হ্যারিস প্রকাশ করেছেন তার নির্বাচনী প্রচারণার অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা বই “১০৭ ডেজ”, যেখানে তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর পর স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রচারণা চালানোর চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছেন।
হ্যারিস বলেন, “আমাদের প্রচারণা দেরিতে শুরু হওয়ায় জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে।”
২০২৪ সালের নির্বাচনে জনপ্রিয় ভোটে ব্যবধান ছিল ২ শতাংশেরও কম, কিন্তু ইলেক্টোরাল কলেজে ট্রাম্পের কাছে তিনি বড় ব্যবধানে হেরে যান।
সাক্ষাৎকারে হ্যারিস ইঙ্গিত দেন, ভবিষ্যতে তিনি নতুন করে মাঠে নামতে পারেন। আপাতত তিনি বই প্রচারণায় ব্যস্ত থাকলেও অনেক বিশ্লেষকের মতে, এটি হয়তো তার পরবর্তী রাজনৈতিক অভিযানের সূচনা।
