Sunday, October 26, 2025
Homeখেলাধুলাক্রিকেটমিরাজের নেতৃত্বে প্রশ্ন, নিজের সিদ্ধান্তে অনিশ্চয়তা

মিরাজের নেতৃত্বে প্রশ্ন, নিজের সিদ্ধান্তে অনিশ্চয়তা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পরও মিরাজের নেতৃত্ব নিয়ে উঠছে সমালোচনার ঝড়

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর বৃহস্পতিবার মেহেদী হাসান মিরাজের এক মন্তব্যে চমকে গেছেন অনেকেই।

তিনি বলেন, সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও তামিম ইকবালের কাছ থেকে নেতৃত্বের পরামর্শ নিচ্ছেন।

এই বক্তব্য অনেকের কাছে ইঙ্গিত দেয়, মিরাজ এখনও নিজের সিদ্ধান্তে দৃঢ় হতে পারছেন না — যা একজন অধিনায়কের মৌলিক গুণ হওয়া উচিত।

এই ধরনের মন্তব্য হয়তো আলোচনায় রাখে, কিন্তু নেতৃত্বের অবস্থানকে শক্তিশালী করে না। কারণ মাঠের পারফরম্যান্স বলছে, মিরাজের নেতৃত্ব এখনো পরিপক্ব হয়নি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয় ছিল বাংলাদেশের চারটি ধারাবাহিক সিরিজ পরাজয়ের পর প্রথম সাফল্য। কিন্তু তবুও মিরাজের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। গত ১৩ ম্যাচে তিনি জিতেছেন মাত্র তিনটিতে।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সাইফ হাসানকে মাত্র দুই ওভার বল করানো এবং শেষ ওভার তার হাতে তুলে দেওয়া ছিল বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত। প্রথম ম্যাচে মাত্র সাত রান দেওয়া সেই বোলারকে কেন আরও সুযোগ দেওয়া হলো না, তা কেউই বুঝতে পারেননি।

এক সিনিয়র ক্রিকেটার নাকি তৃতীয় ম্যাচে সাইফকে কয়েক ওভার বল করাতে বলেছিলেন, কিন্তু মিরাজ তাতেও কান দেননি।

ক্রিকেট অঙ্গনে আলোচনা, সাইফের সাফল্য মিরাজকে অস্বস্তিতে ফেলছে। যদি সাইফ নিয়মিত বল করেন, তবে হয়তো রিশাদ হোসেনসহ তিন পেসার নিয়ে কম্বিনেশন সাজানো হতে পারে, যা মিরাজের জায়গায় চাপ ফেলতে পারে।

তৃতীয় ম্যাচেও নাসুম আহমেদকে পুরো দশ ওভার না করানো ছিল আরেকটি অদ্ভুত সিদ্ধান্ত। নাসুম তখন ছয় ওভারে তিন উইকেট নিয়ে দুর্দান্ত অবস্থায় ছিলেন।

সবচেয়ে বেশি সমালোচনা এসেছে সুপার ওভারে রিশাদকে ব্যাটিংয়ে না পাঠানো নিয়ে। মিরাজ জানিয়েছেন, “সিদ্ধান্তটা কোচ ফিল সিমন্স, সালাউদ্দিন স্যার আর আমার মধ্যে আলোচনা করেই নেওয়া হয়েছিল। আমি একা সিদ্ধান্ত নিইনি।”

কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় — অধিনায়ক হিসেবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি তারই নয়? ক্রিকেটে আলোচনার জায়গা থাকলেও, শেষ কথা অধিনায়কের।

রিশাদের দারুণ ফর্ম হয়তো মিরাজের অবস্থানকে আরও নড়বড়ে করে তুলছে। দুই ম্যাচে ১৩ বলে ২৬ ও ১৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলে তিনি ইতোমধ্যেই আলোচনায়।

নিজের পারফরম্যান্সও খুব আহামরি নয়। ১৩ ইনিংসে ৩৯১ রান, গড় ৩২.৫৮, স্ট্রাইক রেট মাত্র ৭২.৪০। বোলিংয়েও ১৩ উইকেট, গড় ৪৩.৯২। অধিনায়কত্ব হারালে দলের একাদশে তার জায়গা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।

নেতৃত্ব মানে শুধু দলের সামনে দাঁড়ানো নয়, সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকা। মাশরাফি ও তামিমের কাছ থেকে শিখছেন — ভালো কথা, কিন্তু শেখার পাশাপাশি মিরাজকে এখন নিজের পথও খুঁজতে হবে।

RELATED NEWS

Latest News