Friday, October 24, 2025
Homeরাজনীতিজামায়াত আমিরের আবারও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, ১৯৭১ সালের ভূমিকার জন্যও দুঃখপ্রকাশ

জামায়াত আমিরের আবারও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, ১৯৭১ সালের ভূমিকার জন্যও দুঃখপ্রকাশ

নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. শফিকুর রহমান, বলেন—১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত যেকোনো ভুলের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাই

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান আবারও দলটির অতীত ভুল স্বীকার করে ১৯৪৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত যেকোনো ক্ষতির জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমরা মানুষ, আমাদের সংগঠনও মানুষেরই তৈরি। শত সিদ্ধান্তের মধ্যে ৯৯টি সঠিক হতে পারে, কিন্তু একটি ভুল সিদ্ধান্তও যদি জাতির ক্ষতি করে, তবে ক্ষমা চাইতে দ্বিধা কেন?”

তিনি বলেন, “কয়েক দিন আগে আমি বলেছিলাম—১৯৭১ নয়, ১৯৪৭ থেকে যদি জামায়াতে ইসলামীর কারণে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, আমি ব্যক্তিগতভাবে ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”

জামায়াত প্রধান বলেন, ১৯৭১ সালে দলটির নেতৃত্ব দেশের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে যথাযথভাবে সম্মান জানাতে পারেনি, যা ভুল ছিল।
“আমি তখন উপস্থিত ছিলাম না, তাই সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না। তবে এটা ঠিক যে, তখন তাদের উচিত ছিল জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো।”

তিনি জানান, জামায়াত অতীতে অন্তত তিনবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছে—প্রথমে প্রফেসর গোলাম আযম, পরে মওলানা মতিউর রহমান এবং সর্বশেষ তিনি নিজে।

ড. শফিকুর রহমান বলেন, “আজ আবারও প্রকাশ্যে বলছি—১৯৭১ থেকে ২২ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত, আমাদের কারণে যারা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা আহত হয়েছেন, জাতি হোক বা ব্যক্তি, আমরা তাদের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাই।”

তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর জামায়াত প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭ মে এ বছর ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল, যুদ্ধাপরাধ মামলায় এ টি এম আজহারুল ইসলাম মুক্তির পর।

নিউইয়র্কে কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশনস (COBA) আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন,
“আমরা যদি কখনো ক্ষমতায় আসি, বাংলাদেশকে বাংলাদেশ হিসেবেই পরিচালনা করব। এটি আফগানিস্তান, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, লেবানন বা পাকিস্তানের মতো হবে না।”

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, “একজন মানুষ নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু প্রতিবেশী পরিবর্তন করা যায় না। আমরা প্রতিবেশীদের সম্মান করতে চাই, বিনিময়ে তাদের কাছ থেকেও একই সম্মান প্রত্যাশা করি।”

বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা দুটি আলাদা দল। জাতীয় প্রয়োজনে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছি। এখন প্রেক্ষাপট বদলেছে। তারা তাদের এজেন্ডা দেয়, আমরা আমাদেরটা দিই।”

তিনি যোগ করেন, “বিরোধী আসন থেকেও আমরা ভালো কাজকে সমর্থন করব, কিন্তু জাতির ক্ষতি হলে প্রতিবাদ করব। প্রথমে আমরা ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক করি, প্রয়োজনে রাস্তায় নামি। এটি আমাদের নীতি।”

“রাজনীতিতে সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা থাকতে হবে। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হলো—অন্যের মতামতকে সম্মান করা এবং শোনা,” বলেন জামায়াত আমির।

RELATED NEWS

Latest News