পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার একটি ড্রোন হামলায় দুই ইউক্রেনীয় সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং একজন আহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে “ইচ্ছাকৃত হামলার ধারাবাহিকতা।”
ফ্রিডম মিডিয়া, ইউক্রেন সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত একটি সংবাদ সংস্থা, জানায় তাদের টেলিভিশন টিমের গাড়িটি রুশ ল্যানসেট ড্রোনে আঘাতপ্রাপ্ত হয় যখন তারা দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি পেট্রোল স্টেশনে ছিলেন।
সংস্থাটি নিহত সাংবাদিকদের পরিচয় দিয়েছে —
ওলেনা গ্রামোভা (৪৩), দোনেৎস্কের স্থানীয় বাসিন্দা
ইভহেন কারমাজিন (৩৩), ক্রামাতোরস্ক শহরের বাসিন্দা
আরেক সাংবাদিক আলেকজান্ডার কোলিচেভ আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “এগুলো কোনো ভুল নয়, বরং রাশিয়ার সচেতন কৌশল—যুদ্ধাপরাধ প্রকাশে স্বাধীন কণ্ঠগুলোকে স্তব্ধ করার চেষ্টা।”
দোনেৎস্কের আঞ্চলিক গভর্নর ঘটনাটির বিস্তারিত জানিয়ে সাংবাদিকদের গাড়ির দগ্ধ অবস্থা দেখানো ছবি প্রকাশ করেছেন।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়পক্ষের ব্যবহৃত সাশ্রয়ী কিন্তু প্রাণঘাতী ড্রোনের আধিক্য ফ্রন্টলাইন এলাকায় সংবাদকর্মীদের কাজকে ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
এর আগে, রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে ইউক্রেনের একটি ড্রোন হামলায় এক রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের সংবাদদাতা নিহত হন।
এই মাসের শুরুতে ফরাসি ফটোজার্নালিস্ট অ্যান্টনি লালিকানও দোনেৎস্কে দায়িত্ব পালনকালে নিহত হন।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (RSF) জানায়, লালিকান ছিলেন রুশ সেনাদের হাতে নিহত ১৪তম সাংবাদিক।
অন্যদিকে, ইউনেস্কো বলেছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক দুই পক্ষ মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
২০২৩ সালের মে মাসে এএফপি ভিডিও সাংবাদিক আর্মান সোলদিন (৩২) ক্রামাতোরস্কের নিকটবর্তী চাসিভ ইয়ারে নিহত হন।
RSF বৃহস্পতিবারের হামলার দ্রুত তদন্ত দাবি করেছে।
এদিকে ইউক্রেনের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস জানিয়েছে, একই অঞ্চলের জ্ভানিভকা গ্রামে কয়েক দিন আগে রুশ বাহিনী পাঁচ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে।
ক্রামাতোরস্ক, যা যুদ্ধের আগে প্রায় ১.৫ লাখ মানুষের শহর ছিল, এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা দোনেৎস্ক অঞ্চলের কয়েকটি বেসামরিক কেন্দ্রের একটি।
রুশ সেনারা শহর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে, এবং স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে শিশুদের বাধ্যতামূলক সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
