কম্বোডিয়ায় সাইবার প্রতারণার অভিযোগে ১০ জন দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আরও দুইজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো হিউন।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার আটক ব্যক্তিদের এই সপ্তাহেই দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বহুজাতিক প্রতারণা শিল্পের বিস্তার
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কম্বোডিয়ায় বিলিয়ন ডলারের প্রতারণা শিল্প গড়ে উঠেছে। হাজারো মানুষ এতে যুক্ত রয়েছে, কেউ স্বেচ্ছায় আবার কেউ সংগঠিত অপরাধচক্রের জোরপূর্বক শিকার।
গত সপ্তাহান্তে কম্বোডিয়া ৬৪ জন দক্ষিণ কোরিয়ানকে দেশে ফেরত পাঠায়, যারা কথিত “পিগ বুচারিং” বা ধীরে ধীরে বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিখোঁজদের খোঁজে তৎপরতা
চো হিউন জানান, কম্বোডিয়ায় এখনো প্রায় ৮০ জন দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিকের সন্ধান মেলেনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ জন দক্ষিণ কোরিয়ান নিখোঁজ বা জোরপূর্বক আটক হওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন।
সিউল অনুমান করছে, কম্বোডিয়ায় চলমান প্রায় দুই লাখ প্রতারণা কার্যক্রমে এক হাজারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিক জড়িত থাকতে পারে।
দেশে ফেরার পরও তদন্ত
সপ্তাহান্তে যাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তারা দেশে পৌঁছানোর পরপরই আটক হন এবং হাতকড়া পরিয়ে বিমান থেকে নামানো হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পুলিশ সংস্থা জানিয়েছে, ফেরত আসা ৫৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে।
জাতীয় তদন্ত কার্যালয়ের প্রধান পার্ক সুং-জু বলেন, এসব ব্যক্তি ভয়েস ফিশিং, রোমান্স স্ক্যাম ও ‘নো-শো’ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উই সুং-ল্যাক জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কেউ স্বেচ্ছায় এই কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন, আবার কেউ জোরপূর্বক অংশ নেন।
পটভূমিতে এক আলোচিত হত্যাকাণ্ড
এই ব্যাপক প্রত্যার্পণ ও অভিযানের পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে কম্বোডিয়ায় এক দক্ষিণ কোরিয়ান কলেজ শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডকে। অভিযোগ আছে, ওই শিক্ষার্থীকে স্থানীয় অপরাধচক্র নির্যাতন করে হত্যা করেছিল।
এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন ও প্রতারণা কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে যৌথ পদক্ষেপের আহ্বান জানান।