জাতীয় ঐক্য কমিশনের ভাইস চেয়ার প্রফেসর আলী রিয়াজ বলেছেন, ‘জুলাই ন্যাশনাল চার্টার ২০২৫ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি নয়, এটি নাগরিক, রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্রের মধ্যে একটি সামাজিক চুক্তি।’
শুক্রবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত চার্টার স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রফেসর রিয়াজ বলেন, ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের পর রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে গঠিত এই ঐতিহাসিক চুক্তি দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের নতুন দিক উন্মোচন করেছে।
ঐতিহাসিক ‘জুলাই ন্যাশনাল চার্টার ২০২৫’
চিফ অ্যাডভাইজার ও জাতীয় ঐক্য কমিশনের প্রধান প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে ‘জুলাই ন্যাশনাল চার্টার ২০২৫’ স্বাক্ষরিত হয়। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এলডিপি ও আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)সহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও সাতটি বামপন্থী দল অনুষ্ঠানটি বর্জন করে। আলোচনায় মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল।
প্রতিটি দল থেকে দুইজন করে প্রতিনিধি চার্টারে স্বাক্ষর করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস স্বাক্ষর করে চুক্তিকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেন।
গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা
চার্টারে ৮৪টি বড় ধরনের সংস্কার প্রস্তাব এবং ৭ দফা বাস্তবায়ন প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রফেসর রিয়াজ বলেন, “জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের আত্মত্যাগ ও জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাই এই চার্টারের ভিত্তি। আমরা জানি, রাষ্ট্র সংস্কারের যাত্রা একদিনে সম্ভব নয়। কিন্তু এটি বাস্তবায়ন না হলে চার্টারের সাফল্য অর্জিত হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “মতপার্থক্য থাকবে, কিন্তু গণতন্ত্রে মতের ভিন্নতা স্বাভাবিক। ঐক্যের মূল শক্তি হলো বৃহত্তর লক্ষ্য।”
প্রফেসর রিয়াজের ভাষায়, “বিভিন্ন স্রোত এক মোহনায় মিলিত হয়। সেই মোহনা হলো গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন।”
দলগুলোর অংশগ্রহণ
বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষর করেন। জামায়াতে ইসলামী থেকে নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানটি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয়।