জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের (এনসিসি) মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নে সরকারের কাছে একটি সুস্পষ্ট, নির্দিষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ সুপারিশমালা পেশ করা হবে। কমিশনের বর্ধিত মেয়াদ আগামী ৩১ অক্টোবর শেষ হচ্ছে। এর মধ্যেই এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন কমিশনের ভাইস চেয়ার অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠান উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, “কমিশনের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই মেয়াদের মধ্যেই আমরা সনদটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে একটি সুস্পষ্ট, নির্দিষ্ট এবং সম্পূর্ণ সুপারিশ উপস্থাপন করব।”
তিনি আরও বলেন, সনদটি বাস্তবায়নের জন্য কমিশন তার অবশিষ্ট মেয়াদে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এই সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করতে এবং সকলের অংশগ্রহণে এর সঠিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে ठोस পদক্ষেপ নেবে।
অধ্যাপক আলী রিয়াজ আশা প্রকাশ করেন, সব রাজনৈতিক দল ও জোট মতপার্থক্য দূরে রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে শুক্রবারের সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবে।
কমিশনের ভাইস চেয়ার জানান, মেয়াদের মধ্যেই (৩১ অক্টোবর) সরকারের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে, যেখানে পুরো প্রক্রিয়াটি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে। তিনি যোগ করেন, “আট খণ্ডে প্রায় ৩,০০০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনটি আমাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জমা দেওয়া হবে।”
ঐতিহাসিক এই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সম্পর্কে উপদেষ্টা (সংস্কৃতি) মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, সব প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। অনুষ্ঠানে দেশের সব শ্রেণির রাজনীতিবিদ ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। এ উপলক্ষে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনাও প্রদর্শিত হবে।
এর আগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি সমগ্র জাতির জন্য একটি উদযাপনের উপলক্ষ হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের চূড়ান্ত সংস্করণ পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৮৪টি বড় সংস্কার সুপারিশ এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য সাত দফার একটি প্রতিশ্রুতি প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র কাঠামো এবং এর মূল প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কারের লক্ষ্যে এই সনদটি প্রস্তুত করা হয়। দেশের ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে সনদ স্বাক্ষরের জন্য দুজন করে প্রতিনিধি মনোনীত করতে বলা হয়েছিল।