ঢাকা, ২৮ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : ইসলামী চিন্তাবিদ ও হেফাজতে ইসলামের নেতা আল্লামা মামুনুল হক বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধের সমন্বয়ে বিএনপির ভূমিকা আরও জোরালো করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিদেশি আধিপত্য, বিশেষ করে পশ্চিমা সংস্কৃতি ও এলজিবিটি কিউ ধারা বাংলাদেশের সমাজ ও পারিবারিক বন্ধনকে হুমকির মুখে ফেলছে, যা প্রতিরোধে বিএনপির সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়া দরকার।
সম্প্রতি দেওয়া এক বক্তৃতায় মামুনুল হক বলেন, “আমরা এমন একটি রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাস করি যা সর্বোত্তম এবং নির্ভুল—সেটা হলো ইসলাম।” তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে ইসলামী রাজনৈতিক দর্শনের ঐতিহাসিক মিল রয়েছে এবং অতীতেও বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ইসলামী নেতৃত্ব ও বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ঐক্য দেখা গেছে। ভবিষ্যতেও এই ঐক্য বজায় রাখার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মামুনুল হক বলেন, সেদিন বেগম জিয়া আন্দোলনের পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথে নামার আহ্বান জানালেও সেটি কার্যকর হয়নি। তিনি মনে করেন, সেদিন সক্রিয়ভাবে বিএনপি রাজপথে থাকলে আজকের রাজনৈতিক বাস্তবতা ভিন্ন হতে পারত।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বিএনপি যে মেধাবী ও গঠনমূলক রাজনীতির ভিত্তি তৈরি করেছিল, তা বর্তমান প্রজন্মের মধ্যেও চালু রাখতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন প্রজন্মের মেধাবীদের রাজনীতিতে যুক্ত করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মামুনুল বলেন, “আগামী দিনে ছাত্রদলের নেতৃত্বে যেন সত্যিকার মেধাবীরা সুযোগ পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, বিএনপি যেন শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা না করে, বরং বিরোধী দলের কাঠামো এবং গণতান্ত্রিক সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক রূপরেখা তৈরি করে। এ সময় তিনি ৭১ পূর্ববর্তী ছাত্র আন্দোলনের মতো ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ছাত্রদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বিদেশি প্রভাব ও সংস্কৃতির বিরোধিতায় মামুনুল বলেন, “রেইনবো নেশন” বা এলজিবিটি কিউ মতাদর্শের মতো বিষয়গুলো বাংলাদেশে কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তিনি আহ্বান জানান, বিএনপি যেন ইসলামী রাজনীতি বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে এবং ইসলামপন্থীদের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ অবস্থান পরিহার করে।
শেষে পার্বত্য অঞ্চলের উদাহরণ দিয়ে মামুনুল স্মরণ করিয়ে দেন, কীভাবে শহীদ জিয়াউর রহমানের পরিকল্পনায় সেই অঞ্চলে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছিল। তারেক রহমানের নেতৃত্বেও একই ধারায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, দেশপ্রেমিক ও ঈমানদার নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা ও ইসলামিক মূল্যবোধে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। সেই পথে বিএনপির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”