গ্রীসের পার্লামেন্ট বুধবার একটি বিতর্কিত শ্রম সংস্কার বিল পাস করতে যাচ্ছে, যা বিশেষ পরিস্থিতিতে কর্মীদের দিনে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করার অনুমতি দেবে। এই পদক্ষেপকে ঘিরে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা ও বিক্ষোভ চলছে।
তিন শত আসনের পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের সদস্য সংখ্যা ১৫৬ হওয়ায় বিলটি সহজেই পাস হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শ্রমিক ইউনিয়নের বিরোধিতা
এ মাসে শ্রমিক সংগঠনগুলো দুটি সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছে, সর্বশেষটি অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গলবার। ইউনিয়নগুলো বলছে, এই আইন শ্রমিকদের জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করবে এবং দীর্ঘ সময় কাজের চাপ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমমন্ত্রী নিকি কেরামেউস স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল স্কাই টিভি-কে বলেন, “১৩ ঘণ্টার কর্মদিবস সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক এবং বছরে সর্বোচ্চ ৩৭ দিন পর্যন্তই প্রযোজ্য হবে। এটি শুধুমাত্র বেসরকারি খাতে কার্যকর হবে এবং কর্মীর সম্মতি ছাড়া কোনোভাবেই আরোপ করা যাবে না।”
সমালোচকদের বক্তব্য
বিরোধী দল ও শ্রমিক সংগঠনগুলো দাবি করছে, বাস্তবে কর্মীরা চাকরি হারানোর ভয়ে এই অতিরিক্ত সময় কাজ করতে বাধ্য হবেন।
থেসালোনিকিতে এক বিক্ষোভে সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন আডেদি-এর সিনিয়র সদস্য স্টেফানোস চাতজিলিয়াডিস বলেন, “মানুষের স্বাস্থ্য, মানসিক ভারসাম্য ও পারিবারিক জীবন কোনো অর্থের বিনিময়ে প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করার অনুমতি দেওয়া সমাজের জন্য অমানবিক।”
পটভূমি
গ্রীসে বর্তমানে আইনি কর্মঘণ্টা দৈনিক আট ঘণ্টা। অতিরিক্ত কাজের ক্ষেত্রে কর্মীরা অতিরিক্ত পারিশ্রমিক পান। ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, গ্রীসের শ্রমিকরা প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৩৯.৮ ঘণ্টা কাজ করেন, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড় ৩৫.৮ ঘণ্টার চেয়ে বেশি।
একজন ৪৬ বছর বয়সী নির্মাণ শ্রমিক মারিয়া বলেন, “এটি কর্মঘণ্টা বাড়ানোর প্রথম ধাপ মাত্র। বেসরকারি খাতে কেউ না বলতে পারে না, তারা সবসময় চাপ প্রয়োগের উপায় খুঁজে নেয়।”
এর আগে বর্তমান সরকার ছয় দিনের কর্মসপ্তাহ চালুর অনুমোদন দিয়েছিল, বিশেষ করে পর্যটনসহ ব্যস্ত মৌসুমে।