Thursday, October 16, 2025
Homeআন্তর্জাতিকসুদানের খার্তুমে টানা ড্রোন হামলা, সেনাঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু

সুদানের খার্তুমে টানা ড্রোন হামলা, সেনাঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু

দীর্ঘ সময় ধরে চলা হামলায় দুই সেনা নিহত, পুনর্গঠন কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি

সুদানের রাজধানী খার্তুমে বুধবার একাধিক ড্রোন হামলা চালানো হয়। টানা কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী এই হামলার লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনীর দুটি ঘাঁটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এক সামরিক কর্মকর্তা এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সামরিক সূত্র জানায়, সেনারা বেশিরভাগ ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়। তবে কিছু হামলা সফলভাবে আঘাত হানে রাজধানীর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দুটি ঘাঁটিতে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। শুরু থেকে আরএসএফ নিয়মিতভাবে সেনা অবস্থানে ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে।

মানবিক সংকটে জর্জরিত দেশ

যুদ্ধে এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। লাখো মানুষ ঘরছাড়া হয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতি ও ক্ষুধা সংকটের মুখে পড়েছেন।

এ বছরের শুরুর দিকে সেনাবাহিনী রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে। এরপর শহরে তুলনামূলক শান্ত অবস্থা বিরাজ করলেও দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে এখনো সংঘর্ষ চলছে।

দ্বিতীয় দিনের মতো হামলা

ওমদুরমানে বসবাসরত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বুধবার রাতে শহরের আকাশে ড্রোন উড়তে দেখা গেছে এবং উত্তর দিক থেকে প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

সুদান শিল্ড ফোর্সেস জানায়, এটি দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীতে ড্রোন হামলা। মঙ্গলবার খার্তুমের পূর্ব নাইল এলাকায় ড্রোন হামলায় তাদের দুই সদস্য নিহত হয়।

সুদান শিল্ড ফোর্সেসের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবু আকলা কাইকাল, যিনি গত বছর আরএসএফ থেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তার বাহিনীর বিরুদ্ধে উভয় পক্ষের পক্ষেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

পুনর্গঠন ও দুর্ভোগ

রাজধানী পুনর্দখলের পর সরকার বৃহৎ পুনর্গঠন কর্মসূচি শুরু করেছে। পোর্ট সুদান থেকে সরকারি দপ্তরগুলো পুনরায় খার্তুমে স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে।

তবে শহরের বড় অংশ এখনো ধ্বংসস্তূপে পরিণত। বিদ্যুৎ ও মৌলিক সেবার ঘাটতি চলছে। দীর্ঘপাল্লার আরএসএফ ড্রোন হামলায় নিয়মিতভাবে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

দারফুরে তীব্র সংঘর্ষ

দেশটির পশ্চিমাঞ্চল দারফুরে আরএসএফ সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে। তারা ১৮ মাস ধরে এল-ফাশের শহর ঘিরে রেখেছে। এটি দারফুরের শেষ প্রধান শহর যা এখনো সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জাতিসংঘ জানায়, সেখানে প্রায় চার লাখ মানুষ অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। শহরে খাদ্যসংকট তীব্র হয়ে উঠেছে এবং প্রতিদিন মসজিদ ও হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চলছে।

আরএসএফের বিরুদ্ধে দুর্ভিক্ষপীড়িত শরণার্থী শিবিরে হামলার অভিযোগও উঠেছে। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, এসব হামলা গণহত্যার ঝুঁকি তৈরি করছে।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • সুদান

RELATED NEWS

Latest News