সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে আবারও এনসিএল টি-টোয়েন্টির চ্যাম্পিয়ন হলো রংপুর বিভাগ। রবিবার রাতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তারকাখচিত খুলনা বিভাগকে হারিয়ে তারা টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে। গত বছর প্রথম আসরেও জয়ী হয়েছিল এই দলটি।
রংপুরের এই সাফল্যটা এসেছে নানা বাধা পেরিয়ে। দলের তারকা অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেন ও পেসার শরিফুল ইসলাম ছিলেন জাতীয় দলের দায়িত্বে। তাদের অনুপস্থিতিতেও অধিনায়ক আকবর আলী ছিলেন স্থির ও আত্মবিশ্বাসী। তার হাতে ছিল প্রতিশ্রুতিশীল পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও মুশফিক হাসান, যারা আগের মৌসুমে রংপুরকে চারদিনের শিরোপা এনে দিয়েছিলেন।
তবে টুর্নামেন্টের শুরুতেই মুকিদুল ও মুশফিক চোটে পড়েন। সেই সময় আকবর কৌশল পাল্টে নেন। সিলেটের বর্ষায় স্পিন সহায়ক উইকেটে জাতীয় দলের স্পিনার নাসুম আহমেদকে দলে টানেন, যিনি নিজ বিভাগের বিদায়ের পর রংপুরে যোগ দেন। নাসুমের উপস্থিতি ফাইনালসহ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে দারুণ ভূমিকা রাখে।
আকবরের দলের আরেক বড় ভরসা ছিলেন নাসির হোসেন। তিনি প্লে-অফে দুই ম্যাচেই গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। চট্টগ্রামের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ারে করেন ৫৪ রান, আর ফাইনালে খুলনার বিপক্ষে করেন ৪৬ রান। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও নিয়েছেন ৮ ইনিংসে ৬ উইকেট।
এছাড়া জাহিদ জাভেদ, অনিক সরকার ও নতুন মুখ ইকবাল হোসেনের অবদানও ছিল চোখে পড়ার মতো।
আকবর নিজেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। ঢাকার বিপক্ষে এলিমিনেটরে ২৭ বলে ৪৪ রান করেন এবং দুটি ক্যাচ ধরেন। এরপর চট্টগ্রামের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ২১ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে তোলেন।
তার এমন নেতৃত্বে সামাজিক মাধ্যমে তাকে বলা হচ্ছে “চ্যাম্পিয়ন আকবর”। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আকবর আলীর নেতৃত্বে থাকা দল মানেই যেন ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা।
২০২০ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে নিজের নেতৃত্বগুণ প্রমাণ করেন আকবর। এরপর রংপুরকে এনসিএল চারদিনের শিরোপা (২০২২), নর্থ জোনকে বিসিএল একদিনের শিরোপা (২০২৩) এবং রংপুরকে এনসিএল টি-টোয়েন্টির শিরোপা (২০২৪) এনে দেন।
ফাইনাল জয়ের পরও তিনি রয়ে গেলেন শান্ত ও পরিমিত। আকবর বলেন, “পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে খারাপ লাগা বা ভালো লাগা আসে নিজের পারফরম্যান্স থেকে। ভালো খেললে ভালো লাগে, খারাপ খেললে খারাপ লাগে। কিন্তু কে খেলছে, কে খেলছে না — এসব ভাবি না।”