জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনায় বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ১৬ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের ৫৩তম ব্যাচের। তাঁদের মধ্যে আছেন মো. তানভির রহমান মুন, মো. আবদুল্লাহ আল ফাহাদ, আবদুল্লাহ আল সাঈদ, মো. আবু তালহা রনি, রাজিব শেখ, এস এম মাহমুদুন্নবী, মো. আবু সাঈদ, জান্নাতুল আদন, আহমেদ আরেফিন রতুল, তাসনিমুল হাসান জুবায়ের, মো. মাহমুদুল হাসান ফুয়াদ, মো. আল হাসিব, মো. আবদুল্লাহ আল নোমান, মো. রাকিবুল হাসান নিবির, মো. জাহিদুল ইসলাম এবং উশান্তো ত্রিপুরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত রবিবার রাতে হল নম্বর ২১-এ ওই বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগিং করে। উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের নির্দেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ ২০১৮–এর ৪(১)(খ) ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাওলানা ভাসানী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সহকারী প্রক্টর মো. আল আমিন খান সদস্য এবং উপ-রেজিস্ট্রার (উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তি) লুৎফুর রহমান আরিফ সদস্য–সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। কমিটিকে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সাক্ষী ও ভুক্তভোগীদের বরাতে জানা গেছে, রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৫৩তম ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী ৫৪তম ব্যাচের নবীনদের রফিক-জব্বার চত্বর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ২১ নম্বর হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে যেতে বলা হয়।
প্রায় ২০ জন নবীন শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হন। তাঁদের বলা হয়, মোবাইল ফোন বন্ধ করতে এবং আলো নিভিয়ে অন্ধকারে দুই সারিতে দাঁড়াতে। দরজা ও জানালা বন্ধ করে রাখা হয়। প্রায় ১৫–২০ মিনিট তাঁদের দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হয় এবং আচরণ ও নিয়ম-কানুন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
একজন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা ভয়ে ছিলাম। আলো বন্ধ, দরজা বন্ধ, আমরা দুই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ কয়েকজন সিনিয়র ঢুকে আলো জ্বালিয়ে দেয়। তখনই বুঝতে পারি, এটা র্যাগিং।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে স্থায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।