প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, বিদ্যমান প্রতীকের পাশাপাশি নতুন কোনো নির্বাচনী প্রতীক যোগ করতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শাপলা প্রতীক চাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যেকোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আমাদের অনুমোদিত প্রতীকের তালিকা থেকে প্রতীক বেছে নিতে হয়। এনসিপির অনুরোধ করা প্রতীকটি সেই তালিকায় নেই, তাই এটি বরাদ্দ করা যায়নি।”
নতুন প্রতীক যোগ করতে কোনো বাধা আছে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “না, কোনো বাধা নেই। কমিশন চাইলে প্রতীকের সংখ্যা বাড়াতে বা কমাতে পারে। তবে শাপলা প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
রবিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিভাগীয় পর্যায়ের জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এনসিপির নেতৃত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করে নাসির উদ্দিন বলেন, “যারা এখন এনসিপির নেতৃত্বে আছেন, তারা ২০২৪ সালের আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন। আমি বিশ্বাস করি, তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবেন না।”
তিনি আরও বলেন, “এই নির্বাচন কমিশন রাতের অন্ধকারে নির্বাচন করতে চায় না। আমরা এমন একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই যা সবার কাছে উন্মুক্ত ও দৃশ্যমান থাকবে। আমরা গোপনীয়তার মধ্যে পরিচালিত নয়, একটি পরিচ্ছন্ন এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রক্রিয়া চাই।”
স্বচ্ছতা ও গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকারের ওপর জোর দিয়ে সিইসি বলেন, “সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে ভিড় না থাকলে সাংবাদিকরা প্রয়োজনে ১০ মিনিট বা তার বেশি সময় ভেতরে থাকতে পারবেন।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করুক। সঠিক ও সত্য তথ্য যেন জনগণের কাছে পৌঁছায়, সেজন্য কমিশন পূর্ণ সহযোগিতা করবে। একই সঙ্গে আমরা অপতথ্য প্রচার রোধেও সজাগ থাকব।”
তথ্য যাচাইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “মিথ্যা তথ্য জনগণের ক্ষতি করে। তাই সংবাদ প্রকাশের আগে তথ্য যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু গণমাধ্যম এবং ইউটিউব চ্যানেল ইতিমধ্যে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রদানে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।”
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “নারী ও পুরুষ ভোটার উভয়েই তাদের পছন্দের প্রার্থীকে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং প্রিসাইডিং অফিসাররা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন এবং সাংবাদিকদের সহযোগিতা করবেন।”
রোহিঙ্গা ভোটার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, “আসন্ন নির্বাচন হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে, যা প্রকৃত নাগরিকদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে।” শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্বাচনের আগে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
এ সময় অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমদ উপস্থিত ছিলেন।