ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার এক ফোনালাপে তিনি বলেন, ট্রাম্প যদি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ থামাতে পারেন, তবে ইউক্রেনেও শান্তি সম্ভব।
এই ফোনালাপের একদিন আগে রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে বড় আকারের হামলা চালায়। এতে রাজধানী কিয়েভসহ অন্তত ১০টি অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
জেলেনস্কি বলেন, “আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। আলোচনাটি ছিল ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা প্রশংসনীয়।”
তিনি যোগ করেন, “যদি এক অঞ্চলে যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, তবে অন্য অঞ্চলেও তা সম্ভব। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধের ক্ষেত্রেও এমন উদ্যোগ প্রয়োজন।”
ট্রাম্প সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ঘোষণা করেছেন। এর আগে তিনি আগস্টে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করলেও কোনো শান্তি চুক্তি আনতে পারেননি।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্কের পর তাদের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে বলে জানা যায়। ট্রাম্প পরবর্তীতে রাশিয়ার সমালোচনা বাড়ান এবং ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।
সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, ইউক্রেনকে ইউরোপ ও ন্যাটোর সহায়তায় দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধার করতে হবে।
অন্যদিকে, মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগের মাধ্যমে রাশিয়ার হাতে আটক কিছু ইউক্রেনীয় শিশুকে মুক্ত করেছেন।
শনিবার রাশিয়ার হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হন এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় ওডেসা অঞ্চলের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, দুইজন কস্তিয়ানতিনিভকা শহরের একটি গির্জায় নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ অঞ্চলে ইউক্রেনের হামলায় একজন ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।
রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার হামলা চালায়। তারা এটিকে “বিশেষ সামরিক অভিযান” হিসেবে বর্ণনা করে। ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলো একে অবৈধ আগ্রাসন হিসেবে দেখছে, যা ইতিমধ্যে হাজারো প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংস ডেকে এনেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লক্ষাধিক ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন এবং রাশিয়া এখন ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।