বাংলাদেশের সাহিত্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য পরিচিত শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক ডা. সৈয়দ মানজুরুল ইসলাম শুক্রবার মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ৭৪ বছর বয়সে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
অন্যান্য প্রকাশক প্রতিষ্ঠান অন্ন্যপ্রকাশের সিইও মজহারুল ইসলাম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, “প্রফেসর মানজুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন হৃদরোগে ভুগছিলেন। শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
গত ৩ অক্টোবর তিনি রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গাড়িতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে বন্ধুদের সহযোগিতায় ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি ভিত্তিতে হৃদয়ে দুটি স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। তবে অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে ৫ অক্টোবর রাতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
পরবর্তী কয়েকদিনে সামান্য উন্নতি হলেও জটিলতার কারণে আবার লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। শুক্রবার বিকেল ৫টায় লাইফ সাপোর্ট সরানোর পর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার দেহ শুক্রবার রাত থেকে বীরডেম হাসপাতালের মর্গে রাখা হবে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনতার জন্য তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থাকবে। জানাজা ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহরের নামাজের পর অনুষ্ঠিত হবে এবং মরদেহ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ডা. সৈয়দ মানজুরুল ইসলাম ১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনার পাশাপাশি এমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফিকশন, প্রবন্ধ, অনুবাদ ও শিশু সাহিত্য ক্ষেত্রে তার অবদান ব্যাপক স্বীকৃত। তার সাহিত্যকর্মে মানবতা, চিন্তার স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক প্রতিভার প্রতিফলন দেখা যায়।
তার কর্মজীবনে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদকসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহু পুরস্কার লাভ করেন। তিনি স্ত্রী সাঞ্জিদা ইসলাম, একমাত্র পুত্র সাফাকাত ইসলাম, অসংখ্য শিক্ষার্থী, পাঠক ও ভক্ত রেখে গেছেন।
