মস্কোতে আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা বাগ্রাম সামরিক ঘাঁটি পুনর্দখলের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। মস্কোতে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত “মস্কো ফরম্যাট” বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই বৈঠকে অংশ নিয়েছে ভারতের এবং পাকিস্তানের মতো মার্কিন মিত্ররা, পাশাপাশি রাশিয়া, চীন, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলো। এটি রাশিয়ার আয়োজিত সপ্তম আফগানিস্তান সম্পর্কিত বৈঠক, তবে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছেন তালেবান প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অংশগ্রহণকারী দেশগুলো আফগানিস্তান ও তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে সামরিক পরিকাঠামো স্থাপনের প্রচেষ্টা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে। তারা উল্লেখ করেছে, এ ধরনের পদক্ষেপ অঞ্চলকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক নয়।
বৈঠকের সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি পুনরায় বললেন, “আফগানিস্তান একটি স্বাধীন দেশ। ইতিহাস জুড়ে আমরা কখনও বিদেশী সামরিক উপস্থিতি মেনে নিইনি। আমাদের নীতি আফগানিস্তানকে স্বাধীন ও মুক্ত রাখাই লক্ষ্য।”
বাগ্রাম ঘাঁটি, যা কাবুলের বাইরে অবস্থিত, আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ও সুপরিচিত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে ২০২১ সালে মার্কিন সেনা পদত্যাগের পর তালেবান ক্ষমতায় ফেরে।
গত মাসে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, বাগ্রাম ঘাঁটি ফের না দিলে “খারাপ কিছু ঘটতে পারে” এবং এটিকে চীনের কাছে কৌশলগত অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে বর্তমান ও প্রাক্তন মার্কিন কর্মকর্তারা ট্রাম্পের পরিকল্পনার সফলতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, বাগ্রাম পুনর্দখল একটি পুনঃআক্রমণের মতো দেখাতে পারে এবং এর জন্য ১০,০০০ এর বেশি সৈন্য ও উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন হবে।
এই বৈঠক স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলো এবং কিছু আন্তর্জাতিক শক্তি মার্কিন সামরিক পদক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য মনে করছে।