হামাস মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে যে তারা ট্রাম্পের পরিকল্পনার ভিত্তিতে গাজার যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি করতে প্রস্তুত, তবে কিছু শর্ত রয়েছে। একই সময়ে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-থানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র মধ্যস্থতাকারীরা মিসরে গিয়ে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনায় যোগ দিচ্ছেন।
গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ হামাসের হামলা শুরু হওয়ার দুই বছর পূর্তিতে ট্রাম্প আশাবাদ প্রকাশ করেন যে গাজার চুক্তি বিষয়ে অগ্রগতি সম্ভব। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং জ্যারেড কুশনার এই আলোচনায় অংশ নেবেন।
মিসরের শর্ম এল-শেখ রিসোর্টে আলোচনার দ্বিতীয় দিনে হামাসের শীর্ষ নেতা খালিল আল-হাইয়া জানিয়েছেন যে তারা “গুরুত্বপূর্ণ এবং দায়িত্বশীল আলোচনায়” অংশ নিচ্ছে। হামাস দাবি করছে যে যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি “গ্যারান্টি” প্রয়োজন যাতে এটি পুনরায় না ঘটে।
গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাসের হামলার পর থেকে প্রায় ৬৭,০০০ মানুষ নিহত এবং গাজা বিধ্বস্ত হয়েছে। ইসরাইল জানিয়েছে ১,২০০ জন নিহত ও ২৫১ জনকে গাজায় নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন: গাজায় শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আশা
আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের সবচেয়ে সম্ভাব্য পথ এখনও স্পষ্ট হয়েছে। তবে সব পক্ষ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে, কারণ ইসরাইলিরা এই যুদ্ধে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিনের স্মৃতি মনে রাখছে এবং গাজার মানুষদের আশা যুদ্ধের কষ্ট শেষ হবে।
হামাসের পক্ষ থেকে ফাওজি বারহৌম জানিয়েছেন যে আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা “গাজার মানুষের আশা পূরণ” করার জন্য সকল বাধা অতিক্রমের চেষ্টা করছেন। হামাসের দাবিতে রয়েছে পূর্ণ ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং চূড়ান্ত শান্তি চুক্তি। ইসরাইলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে হামাসকে অস্ত্রত্যাগ করতে হবে।
চুক্তি হলেও প্রশ্ন থেকে যাবে গাজার শাসন ও পুনর্গঠন কার হাতে হবে এবং পুনর্গঠনের খরচ কে বহন করবে। ট্রাম্প ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের কোনো ভূমিকা মেনে নিচ্ছেন না।
আরো পড়ুন | দুবাই এয়ারশোতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ বাতিল
অন্যদিকে, গাজায় সাধারণ মানুষ যুদ্ধের সমাপ্তি আশা করছেন। ৪৯ বছর বয়সী প্যালেস্টাইনি মোহাম্মদ ডিব বলেছেন, “দুই বছর ধরে আমরা ভয়ে, বিভীষিকায়, বাস্তুচ্যুত এবং ধ্বংসের মধ্যে জীবন যাপন করছি।”
এই আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধ সমাপ্তির সম্ভাবনা আরও স্পষ্ট হয়েছে। তবে হামাস ও ইসরাইলের শর্তাবলী সমন্বয় করা এখনও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।
