Monday, November 10, 2025
Homeআন্তর্জাতিকবিশ্বে প্রথমবার কয়লার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করল সৌর ও বায়ুশক্তি

বিশ্বে প্রথমবার কয়লার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করল সৌর ও বায়ুশক্তি

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের নীতিগত পরিবর্তনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের প্রবৃদ্ধি শ্লথ, ২০৩০ সালের বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণ অনিশ্চিত

বিশ্বে প্রথমবারের মতো সৌর ও বায়ুশক্তি মিলিয়ে কয়লার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২০২৫ সালে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সাম্প্রতিক নীতিগত পরিবর্তনের কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের প্রবৃদ্ধি মন্থর হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।

জ্বালানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এম্বারের (Ember) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বৈশ্বিক বিদ্যুতের ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ এসেছে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে। অন্যদিকে কয়লা থেকে এসেছে ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ এবং গ্যাসের অংশ ছিল ২৩ শতাংশ।

এম্বারের সিনিয়র বিশ্লেষক ম্যালগরজাতা উইয়াত্রস-মোটিকা বলেন, “আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের শুরু দেখতে পাচ্ছি। সৌর ও বায়ুশক্তির প্রবৃদ্ধি এখন এত দ্রুত হচ্ছে যে তা বৈশ্বিক বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারছে।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ৩১ শতাংশ, যা রেকর্ড। একই সময়ে বায়ুশক্তির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে কয়লা থেকে উৎপাদন কমেছে ০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং গ্যাসের উৎপাদন ০ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

২০২৩ সালে দুবাইয়ে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের দেশগুলো প্রথমবারের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর অঙ্গীকার করে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা তিনগুণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করে।

তবে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) জানিয়েছে, বর্তমান প্রবৃদ্ধির হার অনুযায়ী ২০৩০ সালের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের নীতিগত পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে।

আইইএ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন নবায়নযোগ্য খাতের জন্য কর-প্রণোদনা বাতিল এবং প্রকল্পে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় প্রবৃদ্ধি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ট্রাম্প সম্প্রতি জাতিসংঘে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতারণা” এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে “অকার্যকর ব্যয়বহুল কৌতুক” বলে অভিহিত করেন।

অন্যদিকে, চীন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পে নির্ধারিত মূল্যহার বাতিল করে নিলাম পদ্ধতি চালু করায় বিনিয়োগকারীদের লাভজনকতা কমেছে, ফলে প্রবৃদ্ধিও ধীর হয়েছে। যদিও দেশটি এখনো বিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে এবং ২০৩৫ সালের লক্ষ্য পাঁচ বছর আগেই পূরণে সক্ষম হবে বলে আশা করছে আইইএ।

ভারত এই খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাচ্ছে। সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশটি ২০৩০ সালের লক্ষ্য অর্জনের পথে রয়েছে এবং আগামী পাঁচ বছরে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা আড়াই গুণ বাড়বে। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশেও প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ইতিবাচক বলে জানায় আইইএ।

RELATED NEWS

Latest News