Monday, November 10, 2025
Homeআন্তর্জাতিকফ্রান্সে রাজনৈতিক অচলাবস্থা, লেকোর্নুর শেষ প্রচেষ্টা সরকার গঠনে

ফ্রান্সে রাজনৈতিক অচলাবস্থা, লেকোর্নুর শেষ প্রচেষ্টা সরকার গঠনে

ম্যাক্রোঁর নির্দেশে দুই দিনের সময় পেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকোর্নু

ফ্রান্সের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকোর্নু মঙ্গলবার থেকে নতুন করে সরকার গঠনের আলোচনায় নেমেছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাঁকে দুই দিনের সময় দিয়েছেন রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসন ও স্থিতিশীল মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য।

ম্যাক্রোঁ সেপ্টেম্বরের শুরুতে ৩৯ বছর বয়সী লেকোর্নুকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন, তার আগের সরকার সংসদে অনাস্থা ভোটে পড়ে যায়। রোববার রাতে লেকোর্নু নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করলেও সেটি পুরনো মুখে ভরা থাকায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। পরদিন সকালেই তিনি পদত্যাগ করেন।

তবে সোমবার সন্ধ্যায় ম্যাক্রোঁর অনুরোধে তিনি আবার দায়িত্ব নেন এবং বুধবার পর্যন্ত সময় পান দলগুলোর সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনার জন্য। প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানায়, প্রয়োজনে ম্যাক্রোঁ সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচন ডাকতেও প্রস্তুত।

লেকোর্নু মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তার লক্ষ্য রাজনৈতিক অচলাবস্থা ভেঙে স্থিতিশীল প্রশাসন গঠন করা।

২০২৪ সালের মাঝামাঝি ম্যাক্রোঁ সংসদ ভেঙে আগাম নির্বাচন ডাকেন, কিন্তু ফল আসে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট। সেই থেকেই দেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগছে।

পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে। ডানপন্থী নেতা মারিন লে পেনের দল ন্যাশনাল র‍্যালি (RN) ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এদুয়ার ফিলিপ বর্তমান পরিস্থিতিকে “বেদনাদায়ক রাজনৈতিক খেলা” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, ২০২৬ সালের বাজেট পাসের পর আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ডাকা উচিত।

ম্যাক্রোঁর দলীয় সহকর্মী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতাল বলেছেন, “সময়ের দাবি এখন নতুন কিছু চেষ্টা করা।” অন্যদিকে লে পেন মনে করেন, ম্যাক্রোঁর পদত্যাগই হবে “বুদ্ধিমানের কাজ”।

বামপন্থী নেতা অলিভিয়ে ফোর নতুন “বামঘেঁষা সরকার” গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন, আর ডানপন্থী নেতা ব্রুনো রেতাইয়ো জানিয়েছেন, তার দল সরকারের অংশ হতে পারে, তবে নিজেদের অংশীদারিত্ব কমানো যাবে না।

ফ্রান্সের ঋণ এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৃতীয় সর্বোচ্চ, শুধু গ্রিস ও ইতালির পরেই। দেশটির ঋণ-জিডিপি অনুপাত ইইউ নির্ধারিত ৬০ শতাংশের প্রায় দ্বিগুণ।

ম্যাক্রোঁ এখনো সংসদ ভেঙে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানাননি, এবং নিজের পদত্যাগের কথাও উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে সংকট নিরসনে ব্যর্থ হলে তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে পারেন, যা হবে তার মেয়াদের অষ্টম সরকার।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি নতুন সরকার দ্রুত সমঝোতায় না পৌঁছায়, তাহলে ফ্রান্সকে আবারও বড় ধরনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে হবে।

RELATED NEWS

Latest News