Monday, October 6, 2025
Homeআন্তর্জাতিকনেপাল ও ভারতে টানা বৃষ্টিতে প্রাণহানি ৭০ ছাড়িয়েছে

নেপাল ও ভারতে টানা বৃষ্টিতে প্রাণহানি ৭০ ছাড়িয়েছে

ভূমিধস ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বহু এলাকা এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

নেপাল ও ভারতে টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ভূমিধস ও বন্যায় ৭০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সোমবারও উদ্ধারকর্মীরা জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

অক্টোবরের ৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত সোমবার কিছুটা কমলেও পাহাড়ি এলাকাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন। সড়ক ও সেতু ভেঙে যাওয়ায় ত্রাণকর্মীদের সেখানে পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে।

নেপালের জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটিতে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা লক্ষ্মী ভান্ডারি বলেন, “আমাদের পাহাড়ি পথে হেঁটে নদী পার হতে দড়ি ব্যবহার করতে হয়েছে। এখন বৃষ্টি থেমেছে, তাই আমরা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে আরও জোর দিচ্ছি।”

উদ্ধারে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার ও মোটরবোট ব্যবহার করছে। সপ্তাহান্তে বন্ধ থাকা বেশ কিছু মহাসড়ক সোমবার আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে দুর্গত মানুষদের যাতায়াত সহজ হয়।

অন্যদিকে ভারতের পূর্বাঞ্চলেও অন্তত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের চা উৎপাদন এলাকা।

রাজ্য পুলিশের কর্মকর্তা প্রবীণ প্রকাশ জানিয়েছেন, “দার্জিলিং পাহাড়ি এলাকায় ৩৫টি স্থানে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে, একশর বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। অন্তত ১০ জন এখনো নিখোঁজ।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, দূরবর্তী এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছালে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দার্জিলিং এলাকায় শত শত পর্যটক আটকা পড়েছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, সড়ক পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান করতে বলা হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, কয়েকজন পর্যটককে হাতির পিঠে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দার্জিলিংয়ের স্থানীয় বাসিন্দা অনিতা থাপা বলেন, “আমার পাহাড়ের চূড়ায় থাকা ঘরটি এক মুহূর্তে ভেঙে পড়ল, সব শেষ।”

এদিকে প্রতিবেশী ভুটানেও প্রবল বর্ষণে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী উদ্ধার কার্যক্রমে যোগ দিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল চললেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বন্যা ও ভূমিধসের তীব্রতা, সময়কাল ও সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করছেন।

RELATED NEWS

Latest News