মিসরের শার্ম এল শেখে সোমবার হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদলের মধ্যে পরোক্ষ শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা হচ্ছে বলে দেশটির রাষ্ট্র-সংলগ্ন গণমাধ্যম আল-কাহেরা নিউজ জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, আলোচনায় দুই পক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময়, যুদ্ধবিরতি এবং ভবিষ্যৎ শান্তি প্রক্রিয়ার কাঠামো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
আলোচনায় সরাসরি মুখোমুখি না হয়ে, মধ্যস্থতাকারীরা দুই পক্ষের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করছেন। কাতারে হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলি হামলার কয়েক সপ্তাহ পরই এ বৈঠক শুরু হলো।
হামাসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনের শীর্ষ আলোচক খালিল আল-হাইয়া, যিনি দোহায় হামলায় বেঁচে যান। আলোচনার আগে তিনি মিসরের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বলে জানিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা সূত্র।
এক ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, আলোচনাগুলো কঠিন ও দীর্ঘ হতে পারে। তিনি বলেন, “ইসরায়েলের যুদ্ধ অব্যাহত রাখার মনোভাবের কারণে সমঝোতা সহজ হবে না।”
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফ ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার মিসরে উপস্থিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ট্রাম্প আলোচনায় দ্রুত অগ্রগতির আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে সোমবার গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ফুটেজে গাজা আকাশে ধোঁয়ার স্তম্ভ দেখা গেছে।
আলোচনার অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে গাজায় আটক ৪৭ জন বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব রয়েছে, যেখানে ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দিতে পারে।
ইসরায়েলি সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির বলেছেন, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয় তবে সামরিক অভিযান আবার শুরু করা হবে।
হামাস ও ইসরায়েল উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিলেও, এর বাস্তবায়ন এখনো অনিশ্চিত। প্রস্তাব অনুযায়ী হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হয়েছিলেন, যার মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক। পাল্টা ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
আলোচনার মধ্য দিয়ে গাজায় স্থায়ী শান্তির কোনো সমাধান খুঁজে পাওয়া যায় কি না, এখন সেটিই বিশ্বের নজরে।