ঢাকা, ২৭ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় কৌশলগত পরিবর্তন এনেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। সম্প্রতি পহেলগামের বিসারান উপত্যকায় ঘটে যাওয়া বর্বর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণহানির ঘটনার পর এই পরিবর্তনকে একটি ‘জাগরণ ঘণ্টা’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) সদস্যদের জঙ্গল ও উচ্চভূমির যুদ্ধ কৌশলে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। ইউনিয়ন টেরিটরির বিভিন্ন অঞ্চলে এবং দেশের নানা উচ্চতর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই বাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসীর সংখ্যা ১৪০-এর নিচে। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ জন বিদেশি জঙ্গি কাশ্মীরে এবং ৫৫ থেকে ৫৭ জন জঙ্গি জম্মু অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে। এদের অনেকেই উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং জঙ্গল যুদ্ধের কৌশলে দক্ষ।
এসওজি বাহিনী মূলত ১৯৯০-এর দশকে সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে গঠিত হয়। তবে সময়ের সাথে যুদ্ধক্ষেত্র বদলে গেছে। আজকের লড়াইয়ের ময়দান আরও জটিল, বনভূমি ঘন এবং পাহাড় আরও দুর্গম। ফলে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে এই বাহিনীকে পুনরায় প্রস্তুত করা হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য যে, আসন্ন অমরনাথ যাত্রাকে ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে বাড়তি সতর্কতা রয়েছে। এই উপলক্ষে সন্ত্রাসীদের সীমান্ত পার হয়ে হামলা চালানোর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সে কারণেই নিরাপত্তা বাহিনী এখন থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
কাশ্মীর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, “আমাদের নতুন প্রজন্মের এসওজি সদস্যদের এমনভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে যাতে তারা পাহাড়ি এবং জঙ্গলভিত্তিক অপারেশনেও সফলভাবে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে পারে।”
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রশিক্ষণ কেবল একটি প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নয়, বরং কাশ্মীর উপত্যকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভিত্তি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ একটি শক্ত বার্তা দিয়েছে যে, সন্ত্রাসবাদ দমনে তারা কোন আপস করবে না এবং প্রতিটি সম্ভাব্য ক্ষেত্রেই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। প্রশিক্ষণ এখন শুরু হয়েছে, আর যুদ্ধ হবে জঙ্গলের ভেতরেই।