তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাট জেলার নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, টানা তিন দিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।
রোববার সন্ধ্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দালিয়া পয়েন্ট ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর উঠেছে এবং এ কারণে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং নদী তীরবর্তী মানুষদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করছি।”
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “উজান থেকে প্রবল বৃষ্টিপাত ও পাহাড় ক্ষয়ের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পার্শ্ববর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াবে।”
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রও জানিয়েছে, তিস্তার পানি স্তর রাতভর আরও বাড়তে পারে।
এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি স্থানীয় কৃষকদের জন্য নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. শেখুল আরিফিন বলেন, “তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় বর্তমানে আমন ধান, চীনা বাদাম ও বিভিন্ন সবজি চাষ হচ্ছে। যদি পানি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তবে এসব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।”
তিনি আরও জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও নদীর পানি বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই ঘরবাড়ি ও ফসলের মাঠ রক্ষায় মাটি ও বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধ শক্ত করার চেষ্টা করছেন।
রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানি ২৭ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপরে ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আগামী একদিনের মধ্যেই নদী তীরবর্তী অন্তত তিনটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।