যুক্তরাজ্যের পিসহেভেন এলাকায় একটি মসজিদে আগুন লাগানো হয়েছে, যা পুলিশ ঘৃণামূলক হামলা হিসেবে তদন্ত করছে। ঘটনায় কেউ শারীরিকভাবে আহত না হলেও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনাটি শনিবার রাত প্রায় ১০টার দিকে ঘটে। মসজিদের এক স্বেচ্ছাসেবী ব্যবস্থাপক সিএনএনকে জানান, দুই ব্যক্তি মুখোশ পরে মসজিদের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে এবং পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তখন মসজিদের চেয়ারম্যান ও আরেক উপাসক, দুজনেই ষাটোর্ধ্ব, ভেতরে বসে চা পান করছিলেন। তারা বাইরে জোরে শব্দ শুনে দ্রুত বেরিয়ে আসেন এবং অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। মসজিদের সামনে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ব্যবস্থাপক বলেন, “তারা পুরোপুরি ক্ষতি করার উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিল। এটা ভয়াবহ ছিল।” তিনি আরও বলেন, “সবার মধ্যে ভয় কাজ করছে। কেউ জানে না, পরের হামলা কোথায় হবে।”
চার বছর আগে চালু হওয়া এই ছোট মসজিদে নিয়মিত ১০ থেকে ১৫ জন উপাসক নামাজ আদায় করেন। সেদিন সন্ধ্যা ৮টা ১৫ মিনিটে নামাজ শেষে সবাই চলে গেলে কিছুক্ষণ পরেই হামলাটি ঘটে।
মসজিদের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মুখোশ পরা দুই ব্যক্তি দরজা খোলার চেষ্টা করে এবং পরে দরজা ও গাড়ির ওপর পেট্রোল ঢালে। পুলিশ জানিয়েছে, আগুনে মসজিদের সামনের অংশ এবং একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের এমপি জেমস ম্যাকক্লেরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, “পিসহেভেন মসজিদে আগুনের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এটি স্থানীয় সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুলিশ একে ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে দেখছে।”
মসজিদটি আগেও হামলার শিকার হয়েছিল। গত বছর ভবনে ডিম নিক্ষেপ করা হয় এবং পথচারীদের কাছ থেকে গালাগাল ও বর্ণবাদী মন্তব্য শোনা যায় বলে ব্যবস্থাপক জানান। “কিন্তু এত বড় আকারের হামলার কথা কেউ ভাবেনি,” তিনি বলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় অতিরিক্ত টহল জোরদার করা হয়েছে এবং অন্যান্য উপাসনালয়েও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
এর কয়েক দিন আগেই ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে এক সিনাগগের বাইরে গাড়ি চাপা ও ছুরিকাঘাতে দুই ইহুদি উপাসক নিহত হন। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার সে ঘটনায় ঘৃণা ও সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “ব্রিটেনে ঘৃণা আবারও বাড়ছে, আমাদের তা প্রতিরোধ করতে হবে।”