বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ফিলিস্তিনের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে যে দমন-নিপীড়নের শিকার, তার বিরুদ্ধে তাদের পাশে বিএনপি দৃঢ়ভাবে রয়েছে।
তিনি গাজার ত্রাণ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রবীণ আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শাহিদুল আলমকে প্রশংসা করেছেন।
শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান লিখেছেন, “শাহিদুল আলমের গাজা ফ্লোটিলায় যোগদান কেবল সংহতির প্রকাশ নয়, এটি বিবেকের আহ্বান। বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে তিনি বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন আমরা কখনও অন্যায় ও দমননীতির সামনে মাথা নত করি না। বিএনপি তাঁর পাশে আছে, ফিলিস্তিনের মানুষের পাশেও থাকবে, আজ ও সবসময়।”
শাহিদুল আলম ছিলেন ফ্লোটিলার সর্বশেষ এবং সবচেয়ে বড় জাহাজে। শুক্রবার বিকেলের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী সব ৪৪টি জাহাজ আটক করে প্রায় ৪৫০ জন যাত্রীকে আটক করে, যাদের মধ্যে ছিলেন আন্তর্জাতিক কর্মী, সাংবাদিক ও সংসদ সদস্য।
শনিবার, শাহিদুলের জাহাজ আটক হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর, তারেক রহমান আবারও ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তাঁর প্রতি দলের পূর্ণ সমর্থন জানান।
শাহিদুল শুক্রবার দুপুরে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় জানান, তিনি ফ্লোটিলার শেষ ও সবচেয়ে বড় জাহাজে ছিলেন। এর আগে অন্য সব জাহাজ ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করে। তিনি বলেন, বেশিরভাগ জাহাজ খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা বহন করলেও তাঁর জাহাজের লক্ষ্য ছিল গাজা উপত্যকায় ১৮ বছর ধরে চলমান অবরোধ ভাঙা। জাহাজটিতে ৯৬ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের অধিকাংশই সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী।
শাহিদুলের ভিডিও বার্তার কিছুক্ষণ পর ইসরায়েল জানায়, শেষ জাহাজটিও তারা আটক করেছে।
শনিবার বিকেলে শাহিদুল আলম আরেকটি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, সব ত্রাণবাহী জাহাজ দ্রুতগতিতে ইসরায়েলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, পথে আটকানোর একাধিক চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি লেখেন, “থাউজ্যান্ড ম্যাডলিনস” নামে এই উদ্যোগটি বৈশ্বিক সংহতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। “বিশ্বনেতাদের নিষ্ক্রিয়তা ও ভণ্ডামির মুখে সাধারণ মানুষ নিজেরাই পদক্ষেপ নিয়েছে। হাজার জাহাজের ধারণাটি প্রতীকী হলেও এটি সত্যিকার অর্থে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমুদ্রযাত্রা।”
সবচেয়ে বড় জাহাজ “কনশিয়েন্স” ৩০ সেপ্টেম্বর ইতালির ওত্রান্তো থেকে যাত্রা শুরু করে। ২ অক্টোবর “সুমুদ ফ্লোটিলা”র একটি জাহাজ ইসরায়েলি বাহিনী আটক করে। আরেকটি জাহাজ প্রথমে পালাতে পারলেও পরে তা আটক হয়। “কনশিয়েন্স”-এর আগে আটটি জাহাজ গন্তব্যের পথে রওনা দেয়।
শাহিদুল আরও জানান, “ফ্লোটিং ফ্রিডম কোয়ালিশন” এর দুইটি নৌকা এই অভিযানে যুক্ত ছিল, যদিও তাদের বর্তমান অবস্থান অজানা। “কনশিয়েন্স” জাহাজটি তুলনামূলক দ্রুতগামী হওয়ায় মাঝ সমুদ্রে তাদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরেছে।
তিনি লেখেন, “আমরা একসঙ্গে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এই ঐক্যই আমাদের শক্তি। ইসরায়েল যা-ই করুক, এই মানবীয় স্রোতকে থামাতে পারবে না। আমাদের জাহাজ থামালে, আরও অনেকে আসবে। জনগণের শক্তির কাছে কোনও স্বৈরাচার কখনও জয়ী হতে পারেনি। ইসরায়েলও পারবে না। ফিলিস্তিন অবশ্যই মুক্ত হবে।”