ঢাকা, ২৭ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : ইউক্রেনের উপর রাশিয়া ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে। শনিবার রাতে আকাশজুড়ে ধ্বংসাত্মক শব্দে কেঁপে ওঠে ইউক্রেনের বহু শহর। মস্কো এক রাতে ৩৫৫টি শাহিদ ধাঁচের ড্রোন ও বিভিন্ন ধরণের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা এখন পর্যন্ত রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে সবচেয়ে বিস্তৃত আকাশ হামলা হিসেবে বিবেচিত।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া তাদের TU-95MS বোমারু বিমানের মাধ্যমে ৯টি KH101 ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে। হামলার লক্ষ্য ছিল ওডেসা থেকে কিয়েভ পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে। রাতভর বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বহু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও একটানা প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তবে একাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি।
খারকিভ অঞ্চলে রুশ সেনারা নতুন করে বোমা ও ড্রোন হামলা চালায়। গ্লাইড বোমা, ড্রোন ও গোলাবর্ষণের ফলে একাধিক জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়িয়ে কূটনৈতিক স্তরেও উত্তেজনা চরমে উঠেছে।
এই অবস্থায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘সম্পূর্ণ পাগল’ বলে অভিহিত করেন এবং নতুন করে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন। তিনি বলেন, “আমি জানি না পুতিনের কী হয়েছে, সে শহরে শহরে রকেট পাঠাচ্ছে, আমি একে মোটেও সমর্থন করি না।”
ক্রেমলিন ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘আবেগঘন প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে, তবে স্পষ্টতই উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।
তবে ইউক্রেনও চুপ করে থাকেনি। দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা রুশ অধিকৃত জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে একটি রুশ সেনাবাহিনীর জ্বালানি ট্রেনে ড্রোন হামলার ভিডিও প্রকাশ করেছে। বিস্ফোরণের ফলে বিশাল আগুনের গোলা সৃষ্টি হয়, যা রাশিয়ার ভিতরেও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন:
এদিকে যুদ্ধের মধ্যেই দুই দেশের মধ্যে ১,০০০ বন্দির সবচেয়ে বড় আদান-প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। যদিও যুদ্ধবিরতির আহ্বান রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আক্রমণ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
ইউক্রেনীয় রাজনীতিক ওলান ওমেলিয়ান বলেন, “পুতিন সোভিয়েত সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য যা কিছু সম্ভব তা করবে। তাঁকে শক্তি ও প্রতিরোধের মাধ্যমেই থামাতে হবে, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে নয়।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই যুদ্ধ শুধু ইউরোপেই সীমাবদ্ধ নেই। যদি পুতিন চীন বা অন্য রাষ্ট্রের সমর্থন পায়, তাহলে সংঘাত আরও বিস্তৃত হয়ে পড়তে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্বের জন্য উদ্বেগের। যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই, বরং প্রতিদিন তা আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এটি এক কঠিন সময় যেখানে মানবিক বিপর্যয় রোধে এখনই পদক্ষেপ জরুরি।
