হবিগঞ্জ, ২৬ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হবিগঞ্জ জেলার চুনারঘাট উপজেলার কালেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ১৮ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে। পুশইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন নারী ও পুরুষ এবং দুইজন শিশু রয়েছে। সীমান্তে দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) তাদের আটক করে কালেঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে তাদের চুনারুঘাটে স্থানান্তর করা হয়।
সূত্র জানায়, আটককৃত ব্যক্তিরা দাবি করেছেন তারা দীর্ঘ ১৫ থেকে ১৮ বছর আগে জীবিকার খোঁজে ভারতে গিয়েছিলেন। সেখানকার বিভিন্ন রাজ্যে ইটভাটা ও অন্যান্য শ্রমঘন এলাকায় তারা কাজ করতেন। অনেকের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের একজন জানান, তাদেরকে প্রথমে একটি অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চোখ বেঁধে বিমানে করে স্থানান্তর করা হয়। পরে ত্রিপুরা সীমান্তের কাছাকাছি কোনো এক স্থান থেকে কালেঙ্গা সীমান্তে এনে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।
বিজিবি জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চুনারুঘাটে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সীমান্তে এ ধরনের পুশইন পরিস্থিতি দুই দেশের কূটনৈতিক আলোচনার প্রেক্ষিতে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এই ধরণের হঠাৎ করে পুশইন ঘটনা উদ্বেগজনক এবং এটি মানবিক ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আরও গুরুত্ব সহকারে দেখা দরকার। অনুপ্রবেশ কিংবা পুশব্যাক ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে একটি স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ ধরণের পুশইন ঘটনা তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিজিবি সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকা শিশুদেরও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং সরকারিভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
এ ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করেছে বিজিবি। পুনরায় এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সে লক্ষ্যে সার্বিক নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
