রাশিয়া ভারতের অংশগ্রহণ বাড়াতে চাচ্ছে উত্তর সাগর পথ (Northern Sea Route) এবং আর্কটিক কাউন্সিলে সম্ভাব্য পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এনডিটিভি বুধবার এই খবর প্রকাশ করেছে।
রাশিয়ার আর্টিক উন্নয়নের বিশেষ প্রতিনিধি ভ্লাদিমির পানভ বলেন, ভারত আর্কটিক অংশীদারিত্বে আগ্রহী এবং ভবিষ্যতে NSR-এর উন্নয়নে ভারতের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
উত্তর সাগর পথ রাশিয়ার আর্কটিক ও দূরপ্রাচ্য অঞ্চলের মাধ্যমে চলে এবং ইউরোপ ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত শিপিং করিডর হিসেবে কাজ করে। এটি মহাদেশগুলির মধ্যে পণ্য পরিবহনে প্রধান রুট হয়ে উঠতে পারে এবং সুযেজ বা পানামা নকরের প্রচলিত পথের তুলনায় সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
পানভ বলেন, “উত্তর সাগর পথ শুধুমাত্র একটি নতুন শিপিং লেন নয়, এটি আগামী কয়েক শতাব্দীর জন্য বৈশ্বিক সামুদ্রিক লজিস্টিকসের প্রধান সংযোজন। রেড সাগরের মতো প্রচলিত পথের অস্থিতিশীলতা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জলদস্যুতার বৃদ্ধি বিবেচনা করলে, NSR একটি নিরাপদ ও কার্যকর বিকল্প। ভারত, রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদী বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে, এই পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
ভারত আর্কটিকে ছোট ধরনের বিনিয়োগ করেছে এবং অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে পদচারণা বাড়াতে চায়। ভারত বর্তমানে আর্কটিক কাউন্সিলের পর্যবেক্ষক। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আর্কটিক কাউন্সিল আর্কটিক রাষ্ট্র ও আদি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতার ফোরাম।
পানভ উল্লেখ করেছেন, রাশিয়া বছরব্যাপী NSR নেভিগেশনের নিশ্চয়তার জন্য আটটি নিউক্লিয়ার আইসব্রেকার মোতায়েন করেছে, যার মধ্যে চারটি সর্বাধুনিক। এই আইসব্রেকারগুলি আর্কটিক বরফের মধ্য দিয়ে পথ তৈরি করে, যার ফলে নন-আইস-ক্লাস জাহাজও নিরাপদে রুট অতিক্রম করতে পারে। তিনি উদাহরণ হিসেবে চীনের কার্গো জাহাজের ১৮ দিনে NSR ভ্রমণ সম্পন্ন করা উল্লেখ করেছেন, যা প্রচলিত পথের তুলনায় তিন সপ্তাহের বেশি সময় বাঁচায়।
গত বছর রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন NSR উন্নয়নকে দেশের কৌশলগত অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। রাশিয়ার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে NSR-এর মাধ্যমে বার্ষিক পণ্যবাহী পরিমাণ ২ কোটি টন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, এবং উত্তরবর্তী সমুদ্রবন্দর ও আর্কটিক নৌবাহিনী সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
