ইতালিতে গাজা সহায়তা নৌবহরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রোম, মিলান, তুরিন, ফ্লোরেন্স, বোলোনিয়াসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। শুক্রবার দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ট্রেড ইউনিয়নগুলো।
রোমে পুলিশের হিসাবে প্রায় ১০ হাজার মানুষ কলোসিয়ামের সামনে জড়ো হয়ে মিছিল করেন। বিক্ষোভকারীরা নৌবহরের প্রতি সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকারের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। শহর কাউন্সিলের সদস্য লরেঞ্জো জিয়ারদিনেত্তি বলেন, “নৌবহরের ঘটনাটি আবারও মানুষের চেতনা জাগিয়েছে। দীর্ঘ যুদ্ধ ও হত্যাযজ্ঞের পর এই বিষয়ে নতুনভাবে মনোযোগ তৈরি হয়েছে।”
৭৬ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী জিয়ানফ্রাঙ্কো পাগলিয়ারুলো বলেন, “সরকার ভুক্তভোগীদের বদলে আগ্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
মিলানে পাঁচ হাজারের মতো মানুষ শহরের প্রধান সড়কে মিছিল করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। ফ্লোরেন্স ও বোলোনিয়ায় রেলপথে অবস্থান নিলে ট্রেন চলাচল স্থগিত হয়ে যায় বলে জানিয়েছে ট্রেনইতালিয়া।
এর আগে বৃহস্পতিবার ইতালির সরকার জানায়, গাজা সহায়তা নৌবহর থেকে ৪০ জন ইতালীয় নাগরিককে আটক করেছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী মেলোনি ডেনমার্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠকে বলেন, “আমরা দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। তবে আমি এখনো মনে করি, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি জনগণের কোনো উপকারে আসবে না।”
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তায়ানি সংসদে জানান, আটককৃতদের সোমবার বা মঙ্গলবার তেলআবিব থেকে দুটি চার্টার ফ্লাইটে ইউরোপে পাঠানো হবে। তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে কোনো সহিংসতা বা জটিলতার খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামের এ উদ্যোগে দুইজন ইতালীয় এমপি ও দুইজন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যও ছিলেন। বুধবার ইসরায়েলি নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় প্রবেশ করা নৌযানগুলো আটক করতে শুরু করে। ফ্লোটিলা সংগঠকরা একে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দেন।
শুক্রবারের সাধারণ ধর্মঘটকে সামনে রেখে ইউনিয়ন ইউএসবি জানায়, “সবকিছু থামানোর সময় এসেছে। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।”
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি নৌবহর উদ্যোগকে “বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও এরই মধ্যে ইতালি একটি নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠিয়েছে সহায়তা প্রদানের জন্য।
