অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ক্রমবর্ধমান জটিল কৌশলে পুঁজি পাচার হচ্ছে, যা সাধারণ তদারকির মাধ্যমে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কঠোর নিরীক্ষা, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং সাংবাদিক ও তদন্তকারীদের বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
সোমবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) অডিটরিয়ামে ইআরএফ ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কার্যক্রমের উদ্বোধন এবং “করপোরেট খাতে আর্থিক স্বচ্ছতা” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. আহমেদ বলেন, অর্থ পাচার শুধু অর্থ স্থানান্তরের বিষয় নয়, বরং এমনভাবে করা হয় যাতে সাধারণ নজরদারিতে ধরা পড়ে না। তিনি কাগজপত্রের বাইরে গিয়ে অর্থের উৎস নিরীক্ষা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সামাজিক নিরীক্ষক ও তদন্তকারী দল গঠনের প্রস্তাব দেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, দায়িত্বজ্ঞানহীন সংবাদ পরিবেশন অনেক সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে দেয় বা অগণতান্ত্রিক শক্তিকে শক্তিশালী করে। তাই সাংবাদিকদের উচিত তথ্যনির্ভর প্রতিবেদন করা যা আস্থা তৈরি করে। তিনি আরও বলেন, ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরলে আস্থা তৈরি হয়, আর বেপরোয়া সংবাদ মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস বাড়ায়।
তদন্তমূলক সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের স্বল্পমেয়াদি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। এর মধ্যে থাকবে তথ্য যাচাই, বিশ্লেষণী কৌশল ও কেস স্টাডি। তিনি মাঠপর্যায়ে কাজের ওপরও জোর দেন, যেমন কৃষকের সাক্ষাৎকার নেওয়া, সাপ্লাই চেইন খুঁজে দেখা ও পরিসংখ্যান যাচাই।
ড. আহমেদ বলেন, যাচাইযোগ্য তথ্য ছাড়া সংবাদ গ্রহণযোগ্যতা হারায়। তিনি সরকারি ও বেসরকারি খাতের দেশপ্রেমিক পেশাজীবীদের প্রশংসা করেন এবং গণমাধ্যম ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য যাচাই ও শৃঙ্খলা জোরদারের আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের পরামর্শের ভিত্তিতেই বাস্তবমুখী বাজেট প্রণয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি জানান, গত বছরের বাজেট প্রক্রিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতি বিবেচনা করে বড় বাজেটের বদলে তুলনামূলক ছোট ও বাস্তবসম্মত বাজেট নেওয়া হয়, যা বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ফল।
ড. মজুমদার বলেন, ইআরএফ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা নীতি নির্ধারণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। এটি ভবিষ্যতে সুশাসন, নীতিনির্ধারণ এবং বিশেষজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করবে।