দেশের ১৩ জেলায় দুর্গাপূজা শুরু হওয়ার আগেই পূজামণ্ডপ ও প্রতিমার ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা। তারা এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
শুক্রবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়নাথ কুমার দেব বলেন, “শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় নয়, রাষ্ট্রের আলোকিত চেতনার মাধ্যমেও এই সহিংসতার অবসান ঘটাতে হবে। নিরাপত্তা শুধু পাঁচ দিনের জন্য নয়, বরং সারা বছর নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি জানান, কুষ্টিয়া, চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রাম, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, জামালপুর, নাটোর, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রতিমা ভাঙচুর ও মন্দিরে হামলার খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে প্রায় দেড় যুগ ধরে হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। তিনি জানান, সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং অনেক এলাকায় হামলার পরপরই জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনও তাদের পাশে আছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা আশ্বস্ত। কোনো ধরনের শঙ্কা নেই। সরকার এবং সব পক্ষই চায় পূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হোক। সার্বিক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।”
এ বছর সারাদেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৪৬১। আয়োজকরা জানিয়েছেন, পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ২২টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জন ২ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে আয়োজন সম্পন্ন করা হবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) জানিয়েছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে। ঢাকায় ৯৪টি এবং সারাদেশে ২৮১টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি ব্যাটালিয়ন স্থানীয় পূজা কমিটি ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করছে। দুর্গাপূজার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে কেউ ষড়যন্ত্র করলে তাৎক্ষণিকভাবে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।