Saturday, September 27, 2025
Homeজাতীয়চুরি হওয়া সম্পদ ফেরত দেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের

চুরি হওয়া সম্পদ ফেরত দেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্যে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে পাচার হওয়া চুরি হওয়া সম্পদ ফেরত দিতে হবে। এ জন্য যেসব দেশ ও প্রতিষ্ঠান এসব সম্পদ আশ্রয় দিয়ে রেখেছে তাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) ভাষণে তিনি বলেন, “এই অপরাধে জড়িত হবেন না। সম্পদ তার প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দিন। প্রকৃত মালিকরা হলো কৃষক, শ্রমিক এবং সাধারণ করদাতারা।”

তিনি অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কিছু নিয়মের কারণেই উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে করস্বর্গে স্থানান্তরিত হয়েছে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, গত ১৫ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বাংলাদেশ এখন এসব অবৈধ সম্পদ ফেরত আনার চেষ্টা করছে। তবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইনগত জটিলতা ও নানা বাধার কারণে এ প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আন্তরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া এসব সম্পদ ফেরত আনা সম্ভব হবে না। তাই শক্তিশালী আন্তর্জাতিক নিয়ম প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেন তিনি, যাতে উন্নয়নশীল দেশ থেকে সম্পদ লুণ্ঠন বন্ধ হয় এবং চুরি হলে তা ফেরত আসে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে দুর্নীতি ও সম্পদ লুণ্ঠনের ব্যাপক চিত্র উন্মোচিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে অর্থনীতিতে গুরুতর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে সরকার কঠিন হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলোর একটি হলো রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় পরিবর্তন। নীতি নির্ধারণী সংস্থা ও বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে আলাদা করার জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।

এই পদক্ষেপগুলো সাম্প্রতিক এফএফডি৪ সম্মেলনে গৃহীত ‘সেভিলা কমিটমেন্ট’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রফেসর ইউনূস আশা প্রকাশ করেন, যেমনভাবে বাংলাদেশ সংস্কার বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, তেমনি উন্নত বিশ্বও তাদের দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও শাসন কাঠামোর সংস্কার জরুরি। পাশাপাশি প্রয়োজন আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কাঠামো, অবৈধ অর্থপ্রবাহ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ এবং চুরি হওয়া সম্পদ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

RELATED NEWS

Latest News