রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর রক্ষা বাঁধ আংশিক ধসে নদীতে পড়েছে, যার ফলে সেতুটি এবং রংপুর–লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়ক গুরুতর ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি দিন প্রায় ৩০০০০–৩৫০০০ মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন। হঠাৎ এবং ব্যাপক ক্ষয় দেখা দেওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ১৩০ মিটার অংশ নদীতে চলে গেছে।
আগস্টের ১১ তারিখে প্রায় ৬০ মিটার বাঁধ ধসে ৭০ ফিট গভীর গর্ত তৈরি হয়। ১৭ আগস্ট থেকে ধস ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়, কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শুক্রবার সকালে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ নদীতে বিলীন হয়েছে, ফলে লক্ষ্মীতারী ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে প্রায় ১৭০০ পরিবার সরিয়ে নেওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কয়েক মাস ধরে বাঁধের ব্লক পড়ছে এবং কর্তৃপক্ষকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে, কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
রিপন ও কাইয়ুম নামে দুই স্থানীয় বলেন, “প্রতিদিন ক্ষয় বাড়ছে এবং আমরা ভয়ে বসবাস করছি।” ব্যবসায়ী শাহনাজ বেগম বলেন, “আমি দৈনিক শহরে যাই। যদি সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে।”
ছাত্র বাদশা মিয়া বলেন, “আমি প্রাইভেট ক্লাসে যাচ্ছিলাম, দেখলাম বাঁধের অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। আগামীকাল হয়তো পুরো রাস্তা থাকবে না।”
কৃষক খোরশেদ আলি অভিযোগ করেছেন, তাদের ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে, এবং LGED শুধু আশ্বাস দিচ্ছে, কার্যকর কাজ নেই।
লক্ষ্মীতারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদি জানান, “আমরা LGED-কে একাধিকবার জানিয়েছি। তারা শুধু দেখবেন বলেছে। এখন পুরো সেতুটি ঝুঁকিতে।”
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, বিষয়টি উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “শীঘ্রই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
LGED-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং ক্ষয় রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।