Friday, September 26, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজা নগরে ইসরায়েলি বাহিনীর অগ্রগতি, জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে নেতানিয়াহু

গাজা নগরে ইসরায়েলি বাহিনীর অগ্রগতি, জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে নেতানিয়াহু

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা আলোচনায়, হামলায় নিহত অন্তত ১৯, গাজার মানবিক সংকট আরও গভীর

ইসরায়েলি বাহিনী বৃহস্পতিবার গাজা নগরের আরও ভেতরে প্রবেশ করেছে। একইদিন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ অবসানে নতুন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় আছেন।

গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন একই পরিবারের সদস্য। তারা মধ্য গাজার জাওয়াইদা শহরের একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় প্রাণ হারান। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ ঘটনায় কোনো মন্তব্য না করলেও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ১৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।

ট্যাংক নিয়ে সেনারা গাজা নগরে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েল বলছে, হামাসকে নির্মূল করাই এ অভিযানের উদ্দেশ্য। তবে এতে ব্যাপক ধ্বংস, মানবিক বিপর্যয় ও খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে। নেতানিয়াহুর দাবি, গাজা নগরই হামাসের শেষ ঘাঁটি। সেখানে এখনো বিপুল সংখ্যক বেসামরিক মানুষ আটকে আছেন।

ওয়াশিংটনে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ বুধবার জানান, গাজা সংকট সমাধানে শিগগিরই অগ্রগতি আসবে বলে তারা আশা করছেন। ট্রাম্প মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নেতাদের সঙ্গে ২১ দফা শান্তি পরিকল্পনা শেয়ার করেছেন। এতে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর দখল না করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেমকে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানায়। অন্যদিকে নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন, কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না। যদিও সম্প্রতি ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডাসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে।

গাজা অবরোধ ও সামরিক অভিযানের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েল ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজা যুদ্ধের অভিযোগে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরায়েল আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করছে না এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করছে।

নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি নিউইয়র্কে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে হামাসকে পরাজিত করা, জিম্মিদের মুক্তি এবং নতুন কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন নিয়ে আলোচনা হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। বর্তমানে অন্তত ৪৮ জন এখনো বন্দী আছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

জর্ডানে চিকিৎসার জন্য গাজা থেকে সরিয়ে আনা এক শিশুর মা আফকার আলওয়ান বলেন, “গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ নেই, কোনো ল্যাবরেটরি কাজ করছে না। আমাদের অবস্থা বর্ণনাতীত।”

RELATED NEWS

Latest News