গাজায় মানবিক সহায়তা বহনকারী আন্তর্জাতিক নৌবহরে ড্রোন হামলার পর ইতালি ও স্পেন তাদের সামরিক জাহাজ পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রায় ৫০টি বেসামরিক নৌযান নিয়ে গঠিত গ্লোবাল সামুদ নৌবহর ইসরায়েলের আরোপিত নৌ অবরোধ ভাঙতে চায়। এতে আইনজীবী, সংসদ সদস্য, মানবাধিকারকর্মীসহ সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থানবার্গও আছেন।
ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো বৃহস্পতিবার সংসদে জানান, একটি জাহাজ ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে এবং আরেকটি পথে রয়েছে। তিনি বলেন, এটি যুদ্ধ বা উসকানি নয়, বরং নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রের মানবিক দায়িত্ব।
বুধবার গ্রিসের গাভদোস দ্বীপের কাছাকাছি আন্তর্জাতিক জলসীমায় বহরটি ড্রোন হামলার শিকার হয়। এতে বিস্ফোরক জাতীয় বস্তু এবং রাসায়নিক গুঁড়া ছোড়া হলেও কেউ আহত হয়নি, তবে কয়েকটি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর পরপরই ইতালি প্রথম ফ্রিগেট পাঠায়। স্পেনও এক সামরিক জাহাজ পাঠিয়ে এ উদ্যোগে যুক্ত হয়, যা ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য নজিরবিহীন। এর আগে গাজায় সহায়তা বহর ঠেকাতে ইসরায়েল সামরিক শক্তি ব্যবহার করেছে। ২০১০ সালে মাভি মারমারা জাহাজে হামলায় ১০ জন তুর্কি কর্মী নিহত হন।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, নৌবাহিনী কোনো সামরিক শক্তি ব্যবহার করবে না। তবে তিনি সহায়তা বহরের উদ্যোগকে ঝুঁকিপূর্ণ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেন। ইতালি প্রস্তাব করেছে, সহায়তা সরবরাহ সাইপ্রাসে পৌঁছে দিয়ে ক্যাথলিক চার্চের মাধ্যমে গাজায় বিতরণ করা হোক। ইসরায়েলও এ প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে।
ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইতালির বিরোধী দলের সংসদ সদস্য আরতুরো স্কোত্তো, যিনি বহরে আছেন, জানিয়েছেন, ভ্যাটিকানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নৌ অবরোধ ভাঙার চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করা হবে। তারা প্রস্তাব দিয়েছে, কাছাকাছি যেকোনো দেশে সহায়তা পৌঁছে দিতে, এরপর ইসরায়েল তা গাজায় সরবরাহ করবে।
গ্লোবাল সামুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, তারা ধীরগতিতে গ্রিসের জলসীমায় রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। এ যুদ্ধ প্রায় দুই বছর ধরে চলছে এবং জনসংখ্যার বড় অংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।