সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত স্থাপনের প্রস্তাব করেছে। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য ব্যবসায়িক বিরোধ দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সমাধান করা, যাতে বিনিয়োগকারীর আস্থা বাড়ে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। সোমবার আপিল বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, বাণিজ্যিক আদালতের আওতায় থাকবে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও সামুদ্রিক পরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামো প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ, ডিস্ট্রিবিউশন ও লাইসেন্সিং, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প ডিজাইন, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশনা, বীমা, অংশীদারিত্ব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সেবা খাত এবং শেয়ারহোল্ডার বা যৌথ উদ্যোগ সংক্রান্ত মামলা।
প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক জেলা জজদের মধ্য থেকে নিয়োগ করা হবে। পাশাপাশি হাই কোর্ট ডিভিশনে চিফ জাস্টিস বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চ গঠন করবেন।
এছাড়াও, মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে অনেক বিরোধ আদালতে যাওয়ার আগে সমাধান হয়ে যায় এবং মামলার চাপ কমে। বাণিজ্যিক মামলার ন্যূনতম অর্থমূল্য ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সরকার প্রয়োজনে এটি পুনঃনির্ধারণ করতে পারবে।
বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর করতে প্রস্তাবে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। চূড়ান্ত শুনানি ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব এড়াতে সারসংক্ষেপ রায় প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। আপিল নিষ্পত্তির জন্য বাণিজ্যিক আপিল আদালত ছয় মাস এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার লক্ষ্য নিয়েছে।
প্রস্তাবে বাণিজ্যিক আদালত স্থাপনা ও পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিচারক ও আইনজীবীর প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত উন্নয়নের ধারাবাহিক ব্যবস্থা সম্পর্কেও সুপারিশ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রস্তাব পাঠানোর আগে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের মতামত গ্রহণ করেছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ‘বাংলাদেশে বিচারিক স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারও আয়োজন করা হয়।