হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবানের সরকারের বিরুদ্ধে রবিবার বড় ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আয়োজকদের দাবি, হিরোস স্কয়ারে সমবেত হন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। তাদের অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে করদাতাদের অর্থ ব্যবহার করে ভুয়া প্রচারণা চালানো হচ্ছে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে ঘৃণা উসকে দেওয়া হচ্ছে।
২০১০ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ওরবান সরকারের সমালোচকরা অভিযোগ করে আসছেন, বিপুল অর্থ ব্যয়ে পরিচালিত এই প্রচারণাগুলোতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। বিশেষ করে ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে সমালোচকদের দাবি।
অন্যদিকে সরকার বলছে, তাদের তথাকথিত “তথ্য প্রচারণা” সম্পূর্ণ বাস্তবভিত্তিক এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
রবিবারের বিক্ষোভে যোগ দেওয়া ২৬ বছর বয়সী বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষক সারা লিন্ডনার বলেন, “আমি চাই এমন এক দিন আসুক যখন প্রতিদিন রাজনীতি আর বিজ্ঞাপনের কারণে দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না।”
বিক্ষোভে একটি জেব্রা বেলুনও ভেসে ছিল। সম্প্রতি ওরবান পরিবারের গ্রামীণ বাড়ির কাছে জেব্রা দেখা যাওয়ার পর এটি ক্ষমতাসীনদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের প্রতীক হিসেবে আলোচনায় এসেছে।
৫৮ বছর বয়সী প্রকৌশলী জানোস কঙ্কোলি বলেন, “আমাদের দেশে রাজনৈতিক বিতর্কের পরিবেশ দ্রুত বদলাবে বলে মনে হয় না। যারা ভিন্নভাবে কথা বলেন তারা উত্তেজনা তৈরি করেন, এটি থামতে অনেক সময় লাগবে।”
বিক্ষোভ এমন সময়ে হলো যখন সরকার আগামী অক্টোবরে কর নীতিকে কেন্দ্র করে একটি জাতীয় পরামর্শ প্রক্রিয়া চালুর পরিকল্পনা করছে। বিরোধীদল বলছে, এটি আগের মতো বিভ্রান্তিকর প্রশ্নোত্তর দিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর নতুন উদ্যোগ।
এর আগে ইউক্রেনের ইইউ সদস্যপদ নিয়ে আয়োজিত এক তথাকথিত পরামর্শ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞাপন খাতে প্রায় ২৭.৭ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় হয়েছিল বলে স্থানীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা এইচভিজির তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিক্ষোভের আয়োজন করে লুপ থিয়েটার ট্রুপ নামের একটি নাট্যদল, যারা সামাজিক ইস্যু নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করে পরিচিতি পেয়েছে। আয়োজকদের দাবি, জনগণের করের অর্থে বিভ্রান্তিকর বা ঘৃণা উসকে দেওয়ার মতো রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞাপন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে গণভোটের আয়োজন করা উচিত।
