চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি রবার্ট রেডফোর্ড মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যের নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
তার জনসংযোগ কর্মকর্তা সিন্ডি বার্গার এক বিবৃতিতে জানান, রেডফোর্ড ঘুমের মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে মারা যান। তবে সুনির্দিষ্ট মৃত্যুর কারণ জানানো হয়নি।
১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকায় জন্মগ্রহণ করা রেডফোর্ডের পুরো নাম ছিল চার্লস রবার্ট রেডফোর্ড জুনিয়র। পেশায় তার বাবা ছিলেন একজন হিসাবরক্ষক।
রবার্ট রেডফোর্ড প্রথম বড় সাফল্য পান ১৯৬৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বুচ ক্যাসিডি অ্যান্ড দ্য সানড্যান্স কিড চলচ্চিত্রে পল নিউম্যানের সঙ্গে অভিনয়ের মাধ্যমে। পরবর্তী দুই দশক তিনি অভিনয়ে ব্যস্ত থাকলেও পরবর্তীতে পরিচালনার দিকেও মনোযোগ দেন।
১৯৮০ সালে নির্মিত অর্ডিনারি পিপল চলচ্চিত্রের জন্য তিনি অস্কার জেতেন। এছাড়া ২০০২ সালে তাকে সম্মানসূচক আজীবন সম্মাননা অস্কার প্রদান করা হয়। তার একমাত্র সেরা অভিনেতার মনোনয়ন আসে ১৯৭৩ সালের দ্য স্টিং ছবিতে অভিনয়ের জন্য।
চলচ্চিত্র জগতের পাশাপাশি তিনি পরিবেশ আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন। উটাহর প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।
১৯৮৫ সালে তিনি স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য সানড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল শুরু করেন। এই উৎসব থেকে কুয়েন্টিন টারান্টিনো, স্টিভেন সোডারবার্গ ও জিম জারমাশের মতো নামকরা নির্মাতারা উঠে আসেন।
ব্যক্তিগত জীবনে রেডফোর্ড প্রথম স্ত্রী লোলা ভ্যান ওয়াজেনেনের সঙ্গে চার সন্তানের জনক হন, তবে এক সন্তান শৈশবেই মারা যায়। ২০০৯ সালে তিনি দীর্ঘদিনের সঙ্গী জার্মান শিল্পী সিবিলে জ্যাগারসকে বিয়ে করেন।
বিখ্যাত অভিনেত্রী বারবারা স্ট্রেইস্যান্ড তাকে একসময় সংজ্ঞায়িত করেছিলেন এভাবে: “রবার্ট রেডফোর্ডের কাজ সবসময় তার ব্যক্তিত্বকেই তুলে ধরে—তিনি ছিলেন বুদ্ধিজীবী, শিল্পী এবং প্রকৃত অর্থে একজন কাউবয়।”
৬ দশকের ক্যারিয়ারে হলিউড ও বিশ্ব চলচ্চিত্রে স্থায়ী প্রভাব রেখে যাওয়া এই তারকার প্রয়াণে ভক্ত ও সহকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।