যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে কাতারে ইসরায়েলি হামলার পরিণতি ও গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা হয়।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে একটি হামলা চালায়। এসময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করছিলেন। কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থাকায় ওয়াশিংটন এ হামলার বিরোধিতা করে।
বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের রুবিও বলেন, “ঘটনাটি নিয়ে আমরা খুশি নই, প্রেসিডেন্টও খুশি নন। তবে এখন আমাদের সামনে এগোতে হবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে তা ঠিক করতে হবে।”
রুবিও জানান, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে গাজা সিটির সামরিক পরিকল্পনা এবং পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দখলের বিষয়েও আলোচনা করবেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান গাজা যুদ্ধ দ্রুত শেষ হোক। এতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলায় বন্দি হওয়া জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসকে হুমকি হিসেবে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত।
ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইসরায়েলকে আক্রমণ বন্ধের আহ্বান জানালেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো সেই অবস্থান নেয়নি। সমালোচকদের মতে, এই আক্রমণ গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলবে।
রুবিও রবিবারই নেতানিয়াহুর সঙ্গে পশ্চিম প্রাচীর প্রার্থনায় অংশ নেন। পরে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, জেরুজালেম ইসরায়েলের “চিরন্তন রাজধানী”। তাঁর এই বক্তব্যকে অনেকেই ওয়াশিংটনের অবস্থানের বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন।
নেতানিয়াহু রুবিওর সঙ্গে পশ্চিম প্রাচীরের নিচে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান পরিদর্শন করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্ক “আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী”।
রুবিও সোমবার একটি তীর্থযাত্রীদের সুড়ঙ্গ উদ্বোধনেও অংশ নেন। তিনি এটিকে “বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান” বলে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি ও শান্তি সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, এই কার্যক্রম ইসরায়েলের দখলদারিত্বের বৈধতা বাড়ায়।
ফরাসি নেতৃত্বাধীন জাতিসংঘ সম্মেলনের এক সপ্তাহ আগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আলোচনা হওয়ার কথা। ইসরায়েলের ডানপন্থি সরকার এ স্বীকৃতির বিরোধিতা করে আসছে।
রুবিও-নেতানিয়াহুর এই বৈঠককে ঘিরে গাজা যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।