একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য লোকসংগীতশিল্পী ও লালনগীতির রাণী ফরিদা পারভীন আর নেই। বুধবার রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী ও চার সন্তানসহ অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী রেখে গেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনির অসুস্থতায় ভুগছিলেন ফরিদা পারভীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত ডায়ালাইসিসের পাশাপাশি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যায়। সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর নিয়মিত ডায়ালাইসিসের পর শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় এবং বুধবার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় তিনি বলেন, ফরিদা পারভীন শুধু লালনগীতিই নয়, নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গানেও নিজস্ব স্বাক্ষর রেখেছেন। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি লালনের গানকে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে দিয়েছেন।
ড. ইউনুস বলেন, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও গান থেকে দূরে থাকেননি ফরিদা পারভীন। তার সংগীতপ্রেম প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার অবদান দেশের সংস্কৃতি ও সংগীতাঙ্গনে অম্লান হয়ে থাকবে।
সত্তর দশকের শেষভাগ থেকে লালনগীতির অনন্য সাধক হিসেবে জনপ্রিয়তা পান ফরিদা পারভীন। তাকে বলা হয় লালনগীতির রাণী। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক পান।
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শিল্পীরা মনে করছেন, তার চলে যাওয়া বাংলাদেশের লোকসংগীতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে থাকবে।