সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের ডুয়েলা এলাকায় একটি গির্জায় আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত এবং ৬৩ জন আহত হয়েছেন। রোববার ঘটে যাওয়া এই হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে।
সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানানো হয়, প্রথমে নিহতের সংখ্যা ২২ জন বলা হলেও পরে তা বেড়ে ২৫ জনে দাঁড়ায়। হামলাকারী ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সোমবার এক বিবৃতিতে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারা বলেন, “এই জঘন্য অপরাধে যারা অংশ নিয়েছে বা পরিকল্পনা করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে আমাদের সব নিরাপত্তা সংস্থাকে সক্রিয় করা হয়েছে। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করব যাতে অপরাধীরা দণ্ড পায়।”
তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সরকার ও জনগণের ঐক্য কতটা প্রয়োজন।”
এটি সিরিয়ার রাজধানীতে প্রথম আত্মঘাতী হামলা যেখানে লক্ষ্য ছিল একটি গির্জা। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি বলে জানায় একটি মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা।
২০১১ সালের পর দীর্ঘ সময় ধরে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত সিরিয়া সম্প্রতি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখনো সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মহল থেকেও এই হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। ইসলামি উগ্রবাদ ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়ার জন্য সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিশেষ করে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক রূপান্তরের আহ্বান জানিয়ে আসছে।
সিরিয়ার জনগণ এখন এক গভীর শোক ও অনিশ্চয়তার সময় পার করছে। রাষ্ট্রপতির একাত্মতার ডাক এবং অপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি জনগণের কাছে আশার সঞ্চার করলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।